কলকাতা ভ্রমণ গাইডলাইন। কম খরচে কলকাতা ভ্রমণ। সহজ পথে কলকাতা ভ্রমণ। Kolkata Travel Guide


কলকাতা যার পূর্বের নাম কলিকাতা। ভরতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ ভ্রমণের দিক দিয়ে বেশ শৌখিন। মানুষ জীবনের বিসন্নতাকে দূর করার জন্য একটু প্রশান্তির খোঁজে ছুটে চলছে দিক-বিদিক। বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান, পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র সকল কিছুর স্বাদ গ্রহন শেষে মানুষ আরো একটু প্রশান্তির খোঁজে ছুটছে বিদেশেও যা বাংলাদেশের মানুষের শৌখিনতার বহিঃপ্রকাশ।


বাংলাদেশের মানুষের বিদেশ ভ্রমণের মধ্যে ইন্ডিয়া (ভারত) সবার ওপরে। মানুষ যে শুধু ভ্রমণের উদ্দ্যেশেই যায় বিষয়টি ঠিক তেমন নয় অনেকেই আছেন যারা চিকিৎসা নিতেও যায়।যারা কলকাতা ভ্রমণে ইচ্ছুক কিন্তু প্রোপার গাইডলাইনের অভাবে ট্যুর প্ল্যান করতে পারছেন না তাদের জন্য আজকের এই আর্টকেলটি হতে পারে বেস্ট গাইডলাইন। 

 
আপনি যখন একটি ট্যুর প্ল্যান করবেন তখন অনেকগুলো বিষয় সামনে আসে কোথায় কোথায় ঘুরবেন, কখন কোথায় খাবেন, কোথায় থাকবেন তার একটা খসড়া বাসা থেকেই করে নিবেন যাতে সেখানে কোন প্রকার টাকার সমস্যায় না হয়। কলকাতার সকল দোকানগুলো প্রায় ৮ থেেক ৮:৩০ এর মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। তবে খাবার দোকানগুলো রাত অবদি খোলা পাবেন। 

পেজসূচী পত্রঃ কলকাতা ভ্রমণ গাইডলাইন


সড়ক পথে

ঢাকা টু কলকাতা যাওয়া আগের থেকে অনেক সহজ একটা বিষয়। আপনি আকাশ পথ বা স্থল পথ দুটোতেই ভ্রমণ করতে পারবেন সেটা আপনার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। তবে যারা কম খরচে ভ্রমণ করার প্ল্যান করছেন আমি অবশ্যই ট্রেনে ভ্রমণটা সাজেস্ট করব। তবে আপনাদের আরো একটি সুবিধা রয়েছে তা হলো বাস। প্রতিদিন সকালে এবং রাতে আপনি শ্যামলি, দেশ-ট্রাভেলস, হানিফ, বিআরটিসি, সৌহার্দ্য এই বাস গুলো সরাসরি দেশের বিভিন্ন স্থান হতে সরাসরি সার্ভিস প্রদান করে থাকে।

এছাড়াও গ্রীন-লাইন, সোহাগ, রয়েল, লন্ডন সার্ভিস ইত্যাদি বাসগুলো ঢাকা থেক বেনাপোল পর্যন্ত একবাস, পরে বর্ডার পার করে পেট্রাপোল থেকে তাদেরি নিজস্ব বাস দিয়ে যাত্রী পরিবহন করে থাকে। এই সকল বাসের নন-এসির বাস গুলোর ভাড়া ৯০০-১০০০ আর এসি বাস গুলোর ভাড়া ১৬০০-২০০০ টাকার মতো।এছাড়াও বিজনেসক্লাস অর্থাৎ বিলাসবহুল বাসগুলোর ভাড়া ২০০০-২৫০০ টাকার মতো। মূলত এগুলোতেই যাওয়া অনেকটা আরামদায়ক এবং ঝামেলামুক্ত।

এরা ভালোমানের সুবিধা অর্থাৎ ভিআইপি সুবিধাগুলি পেয়ে থাকে। রাস্তায় কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না। বর্ডারে এদের লোকজন যারা ইমিগ্রেশন নিয়ে কাজ করে সে সকল কাজগুলো মূলত এরাই করে দেয়। এইসকল বাসগুলো আপনাকে একদম কলকাতা নিউ-মার্কটের সামনে নামিয়ে দিবে। সেই রোডটির নাম হলো মারকুস স্ট্রিট। আপনারা সকালে রওনা হলে মোটামুটি দুপুরের মধ্যে পৌঁছে যাবেন।তবে বাসগুলো সকাল ও বিকালে ছেড়ে যায়।  

আরব যারা কম খরচে যেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য অবশ্যই অন্যপথ রয়েছে। তা হলো - আপনি বেনাপোল পর্যন্ত যে কোন বাসে পৌঁছে সেখানকার ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করে , সেখান থেকে অটোতে বনগাঁ রেলস্টেশনে যেতে হবে। সেখানে ২০ রুপি দিয়ে টিকিট কেটে চলে যাবেন কলকাতা। 

রেলপথে

যারা মূলত ট্রেনে ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন তাহলে অবশ্যই ট্রেন আপনার জন্য হতে পারে সবথেকে সুবিধাজনক। মৈত্রী এক্সপ্রেস ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। এ পথে কোন ইমিগ্রেশনের বাধা থাকে না । আপনি যখন ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে উঠবেন তখনি আপনার পাসপোর্ট ও ভিসা চেক করে নেওয়া হবে আবার কলকাতার চিতপুরে একবার পাসপোর্ট এবং ভিসা চেক করা হবে।

মৈত্রী এক্সপ্রেস ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে ছাড়ে এবং কলকাতার কলকাতা স্টেশন থেকে সকাল ৭ টা ১০ মিনিটে ছাড়ে। সকল ট্রেন মূলত সব দিন চলে না। ঢাকা কলকাতা রুটে ট্রেন চলে মোট ৪টি যার মধ্যে ২টি ট্রেন বাংলাদেশের আর ২ টি ট্রেন ভারতের। 
 
ঢাকায় ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় শুধুমাত্র কমলাপুর স্টেশনে। চাইলে আপনি রিটার্ন টিকিট ও কিনতে পারেন।
বাংলাদেশের রেলওয়ের ট্রেনের নাম ও সিডিউলঃ

  • ঢাকা-কলকাতা ঃ ৩১০৭ বারঃ শুক্রবার ও রবিবার
  • কলকাতা-ঢাকাঃ  ৩১১০ বারঃ শনিবার ও সোমবার
ভারত রেলওয়ের ট্রেনর নাম ও সিডিউলঃ
  • কলকাতা-ঢাকাঃ ৩১০৯  বারঃ শুক্রবার ও মঙ্গলবার 
  • ঢাকা-কলকাতাঃ ৩১১০  বারঃ শনিবার ও বুধবার 
এছাড়াও রাজশাহী থেকে সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস সকাল ৬টার দিকে রাজশাহী রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যায় । দর্শনা হল্টে নেমে সেখানে থেকে অটো অথবা ভ্যান গাড়ি নিয়ে একদম কাস্টম অফিসের সামনে নামিয়ে দিবে এরপর সেখানে কাস্টমে কাজ সেরে ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করে সেখানে ইন্ডিয়ান ভ্যান গাড়ি রয়েছে যা আপনাকে ইন্ডিয়ার চেকপোস্ট পর্যন্ত নিয়ে যাবে। 

ইন্ডিয়ার চাকপোস্টে চেকিং শেষে সেখান থেকে বেশ কিছু দূরে গেদে রেলস্টেশন। আপনি চাইলে হেঁটে স্টেশনে যেতে পারেন আবার সেখান থেকে অটোতে স্টেশনে পৌঁছে সেখানে আবার ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করে শিয়ালদহ স্টেশনের টিকিট কেটে শিয়ালদহ পৌঁছে যাবেন ।

আকাশপথে 

আপনি যদি বাস বা ট্রেনে সফর করতে সমস্যা হয় অথবা অপনার ইমার্জেন্সি কোন কাজ বা আপনার সময় সল্প সে ক্ষেত্রে আপনি আকাশপথ কে বেছে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার সময় লাগবে ৪৫ মিনিট। বাংলাদেশ এয়ারল্যান্স এবং ইন্ডিয়ার বেশ কিছু এয়ারল্যান্স কোম্পানিগুলো ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। ভাড়া ১২০০০ থেকে ১৫০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। তবে ১-২ মাস আগে টিকিট বুকিং দিয়ে রাখলে সে ক্ষেত্রে অনেকটা কম এর মধ্যে পাওয়া যায়।

কলকাতার আবাসন ব্যবস্থা

কলকতায় প্রথমবার এসে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় হোটেল ব্যবস্থা নিয়ে। আবাসন ব্যবস্থাটা সম্পূর্ণ আপনার ওপর নির্ভর করে াপনি কেমন স্পটে থাকতে চান। আপনি ৩০০রুপি থেকে ৫০০ রুপির মধ্যেও রুম পেয়ে যাবেন আবার ৫০০০ রুপিতেও বিলাসবহুল রুম পেয়ে যাবেন এমনকি ২৫০০০ রুপিতেও রুম পাবেন । এখন আপনি কোন হোটেলে থাকবেন তা সম্পূর্ণ আপনার বাজেটের ওপর নির্ভর করে। কলকাতা শহর অনেকটা বড় তাই এখানে শহর ভেদে হোটেল খরচ একেকরকম। তাই আপনি কি কাজে এসেছেন তার ওপর ভিত্তি করে হোটেল বাছাই করা উচিত।

কলকাতায় খাবেন কি?

আমরা বাঙালিরা মাছে ভাতে বাঙালি। সেখানে বাংলাদেশের মতোই সকল প্রকার খাবার পেয়ে যাবেন। মাছ, মাংস, ডিম, সবজি সকল প্রকার খাবার পেয়ে যাবেন। 



আশাকরি প্রথমবার ভ্রমণ করলে এই সকল তথ্যগুলো অবশ্যই অনেকটা উপকারে আসবে।  আপনার কলকাতা ভ্রমণ সহজ ও সুন্দর হোক এই কামনা করে আজকের আর্টিকেল এখানেই শেষ করলাম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আবির ইনফো টেকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url