বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় - ঘরোয়া উপায়ে সমাধানের নিয়ম
বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় আমাদের ত্বকের যত্নে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ইন্টারনেট জুড়ে এই ব্রণ দূর করা বা ব্রণের যত্নর নানা রকম পোস্ট বা আর্টিকেল রয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কোনটাতেই হয় না। আজকাল আমরা অনেকেই শুনছি বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করা যায়।
গরমে আপনার ত্বকের যত্নে বরফ হতে পারে সবথেকে কার্যকরী উপাদান। এই বরফ আপনার ত্বকের ফুসকুড়ি, সানবার্ন কমাতে এবং ত্বকে রক্তের চলাচলে বরফ খুবই উপকারী। আজকের এই আর্টিকেলে আপনারা জানবেন সঠিক পদ্ধতিতে বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়, ত্বকের জন্য বরফের উপকারিতা, ব্রণ প্রতিরোধে করণীয়।
সূচীপত্রঃ বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় - ঘরোয়া উপায়ে সমাধানের নিয়ম
ব্রণ কী কারণে হয়?
ব্রণ আমাদের নিত্যদিনের ত্বকের সমস্যা বলা যেতেই পারে। আমরা কম বেশি সকলেই ব্রণের সমস্যায় ভুগেছি। কিন্তু কেউ কখনো জানার চেষ্টা করি নি ব্রণ আসলে কী কারণে হয়। সেই জন্য বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় জানার পূর্বে ব্রণ কেন হয় তা জেনে নেওয়া জরুরি। আপনি ব্রণের কারণ জানতে পারেন তাহলে আপনি এই ব্রণের সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতে পারবেন খুব সহজেই। তাহলে মূল কারণ জেনে নেয়া যাক।
ব্রণ আসলে সৃষ্টি হয় হরমোনের ভারসাম্যের তারতাম্য হওয়ার কারণে। এছাড়াও বেশ কয়েকটা কারণ রয়েছে সেগুলো হলো অতিরিক্ত রাত জাগা, পরিমিত পরিমাণ পানি পান না করা, তেল চর্বি জাতীয় খাবার অতিরিক্ত পরিমানে খাওয়া। আবার প্রতিদিনের খাবার সময়ের তারতাম্য হওয়ার কারণেও এই ত্বকের ব্রণ হয়ে থাকে। তার থেকেও বড় সমস্যা হয় পানির পলিউশোনের বা দূষণের কারণে। তাই সবক্ষেত্রেই আমাদের সাবধান ও নিয়ম মাফিক চলতে হবে। তাহলে ব্রণ দূর করাটা সম্ভব হবে যদিও হরমোন নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নয়।
প্রতিদিন মুখে বরফ দিলে কি হয়
বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় জানার পূর্বে আপনার ত্বকে বরফ ব্যবহার করলে কি হয় তা জানতে হবে। আমরা জেনে বা না জেনে অনেকেই মুখে বরফ ব্যবহার করি। কিন্তু বরফ ব্যবহার করার পর কি কি হয় তা জানা নেই। তাই চলুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক প্রতিদিন মুখে বরফ দিলে কি হয়।
- ত্বকে বরফ ব্যবহারের ফলে ত্বকের অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- আমাদের অনেকের ত্বকের ডার্ক সার্কেল থাকে এই ডার্ক সার্কেল দূর করে এই বরফ।
- বরফের ব্যবহার আপনার ত্বকের রক্ত সঞ্চলন বৃদ্ধি করে।
- চোখের নিচের ফোলাভাব কামতে সাহায্য করে এই বরফ।
- নিয়মিত বরফ ব্যবহারে আপনার ত্বকের বয়সের ছাপ পড়তে পারে না।
- আপনার ত্বকের এক্সফলিয়েট করতে সাহায্য করে।
- আমাদের মুখে অনেকেরই ছিদ্র থাকে এই ছিদ্র গুলো ধীরে ধীরে কমাতে বরফ দেওয়া হয়।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিিয়ে আনতে এই বরফ দেওয়া যায়।
- ত্বকের র্যাশ নিয়ন্ত্রণ করতে আপনি বরফ দিতে পারেন।
- বিভিন্ন রোগ জীবানুর হাত থেকে রক্ষা পেতে বরফ দেওবা যেতে পারে।
বরফ দিয়ে ত্বকের পরিচর্চা করার টিপস
বরফ দিয়ে ত্বকের পরিচর্চা করার টিপস আপনার ত্বককে অনেকটাই স্বস্তি প্রদান করবে। আমরা বরফ ব্যবহার করি সাধারণত আমাদের ত্বকের ব্যাথা বা ফোলাভাব কমাতে। কিন্তু ত্বকের পরিচর্চাতেও দারুন কাজ করে এই বরফ। আপনি যদি প্রতিদিন একটুকরো বরফ ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা প্রাকৃতিক ভাবেই বাড়তে থাকে। এছাড়া ত্বকের দাগ ও ব্রণ কমে। এছাড়াও আমাদের ত্বকের অনেক উপকারে আসে এই বরফ। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক বরফ দিয়ে কীভাবে ত্বকের পরিচর্চা করবেন।
শসা ও লেবু দিয়ে আইস কিউবের ব্যবহার: আমরা অনেকেই জানি শসা ও লেবুতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যার ফলে আমাদের ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করে ও উজ্জ্বলতা প্রদান করে। এছাড়া আপনার ত্বকের সতেজতা বাড়ায়। এতে আপনার ত্বকের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। আবার আমাদের অনেকেরই ত্বকে ব্রণ, র্যাশ, লালচেভাব থাকে এই শসা ও লেবুর আইস কিউবের ব্যবহার আপনাকে এইসকল থেকে মুক্তি দিবে। সেজন্য আপনাকে প্রথমে শসার পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এরপর একটি লেবুর রস এই পেস্টের সাথে মিশিয়ে নিন। এরপর সেই পেস্ট আপনার আইস কিউব ট্রেতে ঢেলে তা ফ্রিজে কয়েকঘন্টার জন্য রেখে দিন। এরপর আপনার ত্বকে ব্যবহার করুন।
অ্যালোভেরা ও বেসিল আইস কিউবের ব্যবহার: অ্যালোভেরা ও বেসিল এই দুটি উপাদান আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী। আমাদের যাদের ত্বক তৈলাক্ত প্রকৃতির তাদের জন্য এই অ্যালোভেরা অনেক কার্যকরী। এই অ্যালোভেরা ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব কমিয়ে দেয়। আর বেসিলে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বকের ট্যান কমায়। ত্বককে প্রশমিত করে। এই কিউব তৈরি করতে আপনাকে প্রথমত বেসিল পাতা গুঁড়ো করে ১ কাপ সমপরিমাণ পানিতে মেশিয়ে নিন। এরমধ্যে ২ চা চামচ অ্যালোভেরা মিশিয়ে নিন। এরপর সব উপাদান ভালোভাবে মিশিয়ে আইস কিউব ট্রেতে ঢেলে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। এরপর বরফ জমে গেলে সেটা মুখে ব্যবহার করুন।
হলুদ আইস কিউবের ব্যবহার: আমরা সবাইজানি হলুদে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আপনার ত্বকের বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না। এছাড়া আমরা যারা রাতজাগি বা অনেক কাজের চাপে ঘুমের সমস্যা হয় তাদের চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে সেইক্ষেত্রে হলুদের ব্যবহার অনেক কার্যকরী। এছাড়া ত্বকের পিগমেন্টেশন কমাতে সাহায্য করে। সেইজন্য আপনাকে একটি পাত্রে ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো ও ১ কাপ গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। এরপর সেটা আইস কিউব ট্রেতে ঢেলে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। এরপর বরফ জমে গেলে সেটা মুখে ব্যবহার করুন।
কেশর আইস কিউবের ব্যবহার: প্রচীনকাল থেকেই রূপচর্চায় এই কেশরের ব্যবহার রয়েছে। আপনি যদি কেশর আইস নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ত্বকের ট্যান, পিম্পল, দাগছোপ, পিগমেন্টেশন হালকা হয়ে যাবে। ত্বকে ঝলমলে ভাব আসবে। সেইজন্য আপনাকে কেশর আইস কিউবের ব্যবহার করতে হবে। আর এই আইস প্যাক বানানোর জন্য আপনাকে কয়েকটি কেশর পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর সেই পানিতে পরিমানমতো গোলাপজল মিশিয়ে তা আইস কিউব ট্রেতে ঢেলে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। এরপর বরফ জমে গেলে সেটা মুখে ব্যবহার করুন।
গোলাপ জলের আইস কিউবের ব্যবহার: আমাদের ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে গোলাপ জল। আপনি যদি প্রতিদিন গোলাপ জলের আইস কিউবের ব্যবহার আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করে, বলিরেখা দূর করে। এই আইস কিউব তৈরিতে আপনাকে প্রথমত ১ কাপ গোলাপ জল সেই সাথে ১ কাপ পরিষ্কার পানি মিশিয়ে নিন। এরপর ট্রেতে ঢেলে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। এখন বরফ জমে গেলে সেটা মুখে ব্যবহার করুন।
যে সকল ক্ষেত্রে বরফ ব্যবহার করবেন
বরফ ব্যবহার করার জন্য কিছু বিশেষ ক্ষেত্র রয়েছে যেগুলো করার পূর্বে অবশ্যই বরফ ব্যবহার করতে হবে। এতে আপনার ত্বক সুরক্ষিত থাকবে। ছোট্ট একটা তথ্য আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমারা অনেকেই আছি যারা ত্বকের পরিচর্চায় বরফ ব্যবহার করি করি কিন্তু এই বরফ আমরা সরাসরি ব্যবহার করি। সেই ক্ষেত্রে আপনি এই বরফকে একটি সুতি কাপড়ে নিয়ে তারপর ব্যবহার করতে হবে। মূল আলোচনায় ফিরে আসি মেয়েদের অনেক সময় কর্মক্ষেত্রে বা কোন ফাংশানে লং লাস্টিং বা দীর্ঘমেয়াদী মেকআপ করতে হয়।
আরো পড়ুনঃ ছেলেদের তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কোন ব্র্যান্ড এর ফেইসওয়াশ ও ক্রীম ভালো
এতে আপনাকে অবশ্যই মেকআপের পূর্বে বরফ দিয়ে ভালোভাবে মুখ ম্যাসাজ করে নিতে হবে। এতে আপনার ত্বকের ট্যানিং এর সমস্যা অনেকাংশেই কমে যাবে। এছাড়াও আপনারা যখন থ্রেডিং (লোম তোলা ) করতে গিয়ে ত্বকে লালচে ভাব আসে তাদের জন্য অবশ্যই বরফের ব্যবহার করতে হবে। আবার যারা ওয়ারিক্সিং অর্থাৎ দেহের অবাঞ্ছিত লোম বা চুল তুলেন তাদের ক্ষেত্রে এটি করার পূর্বে আপনাকে বরফ দিয়ে হালকা করে ম্যাসেজ করে নিতে হবে।
বরফ দিয়ে যেভাবে ব্রণ দূর করা যায়
বরফ দিয়ে যেভাবে ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায়ে সমাধানের নিয়ম জেনে নিন এই পয়েন্টে। অনেকেরই প্রশ্ন থাকে বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করা যায় কি না। এটার উত্তর হলো হ্যাঁ আবার না। এটা সম্পূণ্ণ আপনার ত্বকের উপর নির্ভর করে। যে সকল ত্বকে সক্রিয় ব্রণের ওপর বরফ প্রয়োগ করলে আপনার ত্বকের বাম্পের আকার কমাতে, ব্যাথা কমাতে ও ত্বকের লালাচেভাব বা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন বরফ ব্যবহারের ফলে ব্রণ ধীরে ধীরে সংকুচিত হতে থাকে যতক্ষণ না এটা নিরাপদে বের হয়ে যাচ্ছে।
আবার এটি ব্রণ পরবর্তী ফ্লেয়ার আপেও সাহায্য করে। এতে ব্রণের কারণে ত্বকে যেখানে যেখানে ড্যামেজ বা ক্ষতি হয়েছে সেখানে নিরাময় করার পাশাপাশি খোলা পোরস বন্ধ হয়ে যায়। অপরপক্ষে বলতে গেলে বলা যায়, যাদের ত্বক অনেক সেনসেটিভ অর্থাৎ আপনি যখন আপনার ত্বকে বরফ ব্যবহার করেন তখনই আপনার ত্বকে লালচে অনুভব করবেন। আবার বরফ ব্যবহারের ফলে আপনার ব্রণ ও প্রদাহ ট্রিগার করে। সেক্ষেত্রে আপনার ত্বকে বরফ কাজ করবে না। এছাড়া যাদের ত্বকে ইনফ্লেমটরি ব্রণ আছে যা সাধারণত ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস নামে পরিচিত তাদের ক্ষেত্রে বরফ ব্যবহারে কোন ফলাফল পাবেন না।
রূপচর্চায় বরফের প্যাক তৈরির নিয়ম
ত্বকের যত্নে আমরা বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন পথ অবলম্বন করে থাকি। এক্ষেত্রে বরফ হতে পারে উপকারী একটি উপাদান। আপনি বিভিন্ন ভেষজ উপাদান দিয়ে বরফ বানিয়ে তা খুব সহজেই আপনার ত্বকের পরিচর্চার কাজে ব্যবহার করতে পারেন। আজকের এই পয়েন্টে আমরা জানবো ভেষজ উপাদানের বরফ প্যাক বানিয়ে কীভাবে রূপচর্চা করবেন। আরেকটি বিষয় অবগত করে রাখি এই ভেষজ প্যাকের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তাহলে চলুন শুরু করা যাক ভেষজ প্যাক বানানোর নিয়ম।
প্রথমত আমরা আধা কাপ অ্যালোভেরা জেল আইস ট্রেতে ঢেলে নিব। এরপর তা ২ ঘন্টার জন্য ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখবো। এরপর এটি মুখে ও ঘাড়ে ১৫ মিনিট এর মতো ম্যাসেজ করবো। আমরাজানি অ্যালোভ্যারাতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। যা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরী উপাদান, রোদে পুড়া দাগ, ত্বকের জ্বালা পুড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এরপর আরো একটি প্যাক সম্পর্কে যা জানবো যা রূপ চর্চায় সাহায্য করবে।
প্রথমত আপনি এক টেবিল চামচ সমপরিমান শশার রস সেই সাথে তিন টেবিল চামচ মধু এক কাপ পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার এটি আগের মতোই বরফের ট্রেতে ঢেলে নিন। এরপর তা ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে বরফ জমলে তা বের করে ফেলুন। এরপর মুখে ও ঘাড়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট এর মতো ম্যাসাজ করে নিন। তারপর পানি দিয়ে মুখ ও ঘাড় ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বক অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। এইসব প্যাকে কোন প্রকার পাশ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
আরো পড়ুনঃ এলার্জিতে নিমপাতার বব্যহার
এরপর আরো একটি উপায় রয়েছে সেটি হলো দুই টেবিল চামচ কাঁচা দুধ নিন। এরমধ্যে লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এবার ভালোভাবে মিশিয়ে তা আইস ট্রেতে ঢেলে তা ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। দুই ঘন্টা ডিপ ফ্রিজে রাখার পর বরফ হবে গেলে তা আগের মতি ম্যাসেজ করুন। পরবর্তীতে তা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দুধে রয়েছে ল্যাকটিক এসিড যা আমাদের ত্বকের কোলোজেন বৃদ্ধি করে। সেই সাথে ত্বকের বলরেখা দূর করে। আর লেবোর রস আমাদের ত্বকের উজ্জ্বতা ফেরাতে সাহায্য করে।
এবার দুই টেবিল চামচ নিম পাতার গুঁড়ো নিয়ে নিন। এরপর আধাকাপ পানিতে তা ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরমধ্যে এক চিমটি হলুদের গুঁড়ো দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর তা আইস ট্রেতে করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন যতক্ষণ না বরফ হচ্ছে ততক্ষণ। এরপর নিমপাতা ও হলুদের গুঁড়ো দিয়ে বরফ প্যাকটি ভালোভাবে মুখে ও ঘাড়ে ম্যাসাজ করুন। পরবর্তীতে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। নিম পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ত্বকের জীবানু ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
সর্বশেষ প্যাক বানাতে প্রয়োজন এক কাপ গ্রীন টি তৈরি করে নিন। এবার এই গ্রীন টি সরাসরি আইস ট্রেতে ঢেলে তা ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। এরপর ২-৩ ঘন্টা পর বরফ হয়ে গেলে তা চোখের নিচে ম্যাসাজ করতে থাকুন। আপনার চোখের নিচে থাকা কালো দাগ অনায়াসে দূর হয়ে যাবে। এই গ্রীন টি ব্যবহারে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার সাথে চোখের ফোলাভাব অনেকাংশেই দূর করে দেয়।
বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় ও ঘরোয়া উপায়ে সমাধানের নিয়ম রয়েছে তবে জানিয়ে রাখি শুধু বরফ দিয়ে ম্যাসাজ করলে আপনার ব্রণ কখনোই দূর হবে। আপনাদের সুবিধার্থে জানিয়ে রাখি বরফ কখনো ব্রণে সরাসরি প্রভাব ফেলে না অর্থাৎ ব্রণ দূর করে না। এটি শুধুমাত্র আপনার ত্বকের ব্রণের ব্যাথা, প্রদাহ ও জ্বালাভাব কমাতে সাহায্য করে। ব্রণ দূর করতে চাইলে শুধু বরফ ঘষলে চলবে না। সে সাথে আরো অনেক কিছুর ব্যবহার করতে হবে। এই ব্রণের ব্যাথা, ত্বকের জ্বালা-পোড়া বা প্রদাহ কমাতে বরফের ব্যবহার জানতে হবে।
আরো পড়ুনঃ সর্দি, কাশিতে ঘরোয়া সমাধান - সর্দি কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায়
প্রথমত ২-৩ টুকরো বরফকে একটি সুতি কাপড়ে ভালোমতো মুড়ে নিন। এরপর এই বরফসমেত সুতি কাপড়টা ব্রণের উপর চেপে ধরুন। টানা ৩০সেকেন্ড থেকে ১ মিনিটের মতো চেপে ধরে রাখুন। এরপর তা সরিয়ে নিন। এভাবে ব্রণ দ্বারা আক্রান্ত স্থান গুলোতে ৫ মিনিটের মতো ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ধরে চেপে ধরে রাখুন। এতে একদিকে আপনার ত্বকের ব্রণের ব্যাথা, প্রদাহ কমবে অপরদিকে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ব্রণ সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়।
ত্বক সুস্থ্য রাখতে বরফের উপকারিতা
ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অবশ্যই বরফের উপকারিতা রয়েছে। আপনি আপনার ত্বকে বরফ প্রয়োগের ফলে তাৎক্ষণিক ত্বকের ফোলাভাব কমে যাবে। এই জন্য অনেক সেলিব্রটি তারা ঘুম থেকে ওঠার পরে ত্বকে বরফ দিয়ে ম্যাসাজ করে বা বরফের পানিতে তাদের মুখ ডুবিয়ে দেয়। এতে সকালের যে ফোলাভাব তা অনেকটাই কেটে যায়। আপনার ক্লান্ত ত্বককে জাগিয়ে তুলতে এই বরফের জোড়াভাব নেই। তাই আপনিও প্রতিদিন সকালে এই বরফ ব্যবহার করতে পারেন।
মুখে বরফ লাগালে তা পোরস টাইটেনিং করে ও ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। সুতরাং আপনি যদি ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস বা নিস্তেজ ত্বক হয়ে থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই বরফ আপনাকে সাহায্য করবে। এছাড়াও আপনি জানেন বরফের ব্যবহার আমাদের ত্বকের রক্ত সঞ্চালনে অনেক ভূমিকা রাখে যা আপনার ত্বককে ফ্লাশ ও তাজা চেহারা দেয়। এছাড়া আপনার যদি ত্বকের নিচে ডাকশ সার্কেল ও ফোলাভাব থাকে তাহলে এই বরফ সেগুলো দূর করতে সাহায্য করবে।
আমাদের শেষকথা
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা জানলাম বরফ দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়, ঘরোয়া উপায়ে সমাধানের নিয়ম, বরফ ত্বকের জন্য কতোটা উপাকরী সেইসাথে কিছু ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে টিপস ও কিছু প্যাক তৈরির নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আশাকরি বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন। আপনার ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে প্যাক গুলো অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। আমরা যারা ব্রণের সমস্যায় ভুক্তোভুগী তারাও অনায়াসে প্যাকগুলো ব্যবহার করতে পারবেন কারণ এতে কোন প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
এইরকম আরো তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। কারণ আমরা আমদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরণের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
আবির ইনফো টেকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url