দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করার উপায় - চিরতরে কীভাবে ডায়াবেটিস নিরাময় করবেন

দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করার উপায় মধ্যে অনেক রকমের উপায় রয়েছে। আমরা বাঙালিরা অনেক খাদ্য প্রবন যার কারণে আমাদের ঘরে ঘরে আজকে ডায়াবরটিস নামক ভয়ংকর রোগ বাসা বেধেছে। আপনার অজান্তেই আপনার শরীরে ডায়াবেটিস নামক রোগটি বিস্তার লাভ কর‍ছে। এই জন্য সঠিক পরিচর্চা না করলে জীবন ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকতে পারে।

দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করার উপায়-চিরতরে কীভাবে ডায়াবেটিস নিরাময় করবেন

আজকের আর্টিকেলে আমরা মূলত জানবো কীভাবে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করার উপায় সেই সাথে জানবো চিরতরে কীভাবে ডায়াবেটিস নিরাময় করবেন এবং কীভাবে আপনার জীবন পরিচালনা করবেন ,খাদ্যাভাসে কী কী পরিবর্তন আনবেন সকল বিষয় নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করব।

সূচীপত্রঃ দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করার উপায়-চিরতরে কীভাবে ডায়াবেটিস নিরাময় করবেন

ডায়াবেটিস কয় ধরণের ও কী কী?

ডায়াবেটিস কয় ধরণের ও কী কী তা আমরা অনেকেই জানি না। আমরা শুধুমাত্র ডায়াবেটিস নামের সাথেই পরিচিত। ডায়াবেটিস ২ ধরণের হয়ে থাকে একটি টাইপ-১ এবং অপরটি টাইপ-২। টাইপ-১ ও টাইপ-২ এর মধ্যে কিছু বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। চলুন নেয়া যাক টাইপ-১ ও টাইপ-২ সম্পর্কে বিস্তারিত।

টাইপ-১ ডায়াবেটিস: আপনার শরীররে অগ্নাশয়ে যদি কম পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি হয় বা একেবারেই তৈরি না হয় তাহলে বুজবেন আপনার টাইপ-১ ডায়াবেটিস হয়েছে। মনে রাখবেন এই টাইপ-১ ডায়াবেটিস হলে আপনার শরীরে রক্তে শর্করার পরিমাণ সঠিক রাখতে পারে না। এই ডায়াবেটিস বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাচ্চাদের হয়ে থাকে।

টাইপ-২ ডায়াবেটিস: টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আপনার শরীরের অগ্নাশয়ে ইনসুলিন তৈরি হবে কিন্তু তা সঠিকভাবে আপনার শরীরের কাজ করবে না। অর্থাৎআমাদের শরীরের রক্তেত শর্করা যে হারে নিয়ন্ত্রন করা উচিত সেই হারে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয় না। বরং এটি বাড়তে থাকে। এর ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গঢে ক্ষতি হয়। বিশেষকরে কিডনি, হার্ট, চোখ ইত্যাদি। এই টাইপ-২ ডায়াবেটিস সাধারণত বয়স্ক ব্যাক্তিদের হয়ে থাকে। এই ডায়াবেটিসের লক্ষণ প্রকাশ হতে বেশ অনেক সময় লাগে সহজে বুঝা যায় না।

কীভাবে বুঝবেন আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত?

কীভাবে বুঝবেন আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত? অনেকের মনেই এই প্রশ্নটি হতে পারে। আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কিনা তা বুঝার জন্য আপনাকে আপনার শরীরের দিকে খেয়ালন রাখতে হবে এবং খুব ভালোভাবে তা পর্যালোচনা করতে হবে। তাহলে চলুন জেনে যাক কীভাবে আপনি আপনার শরীরে ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা তা বুঝতে পারবেন।

  • আপনি যখন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবেন তখন আপনার শরীরের যে অতিরিক্ত ইনসুলিন থাকে তা আর কাজ করে না এতে আপনার শরীরের শর্করার পরিমান বেড়ে যায় যার কারণে আপনার ঘন ঘন প্রসাব হয়।

  • যখন আপনার শরীরের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় এতে গ্লুকোজ বহনকারী টিউবগুলো হালকা ক্ষতির সম্মুখীন হয় এতে আপনার শরীরে ক্লান্ত বোধ হবে মাধা ঘুরপাক খাবে। শরীর অনেক সময় কাঁপতে শুরু করে।

  • যদি আপনার ডায়াবেটিস হয়ে থাকে তাহলে আপনার শরীরে জলের পরিমান ঘাটতি দেখা দিতে পারে এতে আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।

  • যদি আপনার শরীরে কোন স্থানে কেটে যায় তাহলে সেই স্থানে শুকাতে যদি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি সময় লাগে তাহলে আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

  • আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন তাহলে আপনর চোখের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে এতে আপনার আপনার চোখের আকৃতি পর্যন্ত পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে এবং আপনি দৃষ্টিহীন ও হয়ে যেতে পারেন।

  • ডায়াবেটিসে আপনার স্নায়ু পর্যন্ত ক্ষতি হতে পারে। এতে আপনার মস্তিষ্ক ক্ষতি হতে পারে।

  • আপনার শরীরে ডায়াবেটিস হলে পানির পিপাসা লাগবে এবং শরীরে পানির পানির ঘাটতি দেখা দিবে।

যে ১০ টি লক্ষণ দেখলে ডায়াবেটিস থেকে সতর্ক হবেন

যাদের টাইপ-২ ধরণের ডায়াবেটিস তাদের পরিমান টা প্রায় ৭৫ শতাংশ। এই ৭৫ শতাংশ মানুষদের আগে থেকে সতর্ক থাকলে শারীরিক পরিশ্রম করলে এবং খ্যাদাভাসে পরিবর্তন আনলেও আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব। কিন্তো একবার যদি ডায়াবেটিস হয়ে যায় তাহলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া অনেকটাই কঠিন। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কোন ১০ টি লক্ষণ দেখলে ডায়াবেটিস থেকে সতর্ক হবেন।

  • ঘন ঘন প্রসাব হওয়া ও পানির পিপাসা লাগা।
  • কোন প্রকার কোন কারণ ছাড়াই আপনার শরীরের ওজন কমতে থাকবে।
  • আপনার শরীরের ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে।
  • ক্ষুধা বেড়ে যাবে কিছুক্ষণ পর পরই ক্ষুধা লাগবে।
  • আপনার শরীএর কোন কারণ ছাড়াই দুর্বল লাগবে, গা ঝিম ঝিম লাগবে সাথে মাধা ঘুরপাক খাবে।
  • মিষ্টি জাতীয় খাবারের উপর আকর্ষন আস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাবে।
  • আপনার শরীরে যদি কোথাও কেটে যায় তাহলে সেখানের ঘা শুকাতে অনেক সময় লাগবে।
  • আপনার শরীরে স্কিন খসখসে হয়ে যাবে এবং চুলকানি শুরু হবে।
  • আপনার বিরক্তি ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে উঠবে।
  • চোখে কম দেখতে শুরু করবেন এবং বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে শুরু করবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ৭ টি উপায় মেনে চলুন

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ৬টি উপায় মেনে চলুন খুব অল্প সময়ে আপনি নিজেই এর ফল বুঝতে পারবেন। ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা যা ওষুধের চেয়ে আপনার জীবনযাত্রায় অর্থাৎ আপনার প্রতিদিনের যে রুটিন তা পরিবর্তনে ও পরিচর্চায় পরিবর্তন আনলে আপনি এই সনস্যা থেকে খুব দ্রুত পরিত্রাণ পাবেন। তাই চলুন জেনে আসি দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়-

নিয়মিত শরীর চর্চা: নিয়মিত শরীর চর্চা ডায়াবেটিসের মহাঔষধ বলা বাহুল্য। যারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তাদের জন্য নিয়মিত এবং নির্দিষ্ট সময়ে শরীর চর্চা করা বাধ্যতামূলক। এতে আপনার শরীরের ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা নিয়ন্ত্রণর থাকে। এর ফলে রক্তের শর্করার পরিমাণ কমে এবং শরীরের ওজন ও নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রত্যেক সপ্তাহে ১৫০ মিনিট অ্যারোবিক ব্যায়াম যেমন: হাঁটা, সাতার কাঁটা, সাইকেল চালানো এগুলো খুবই উপকারী। এছাড়াও শক্তি বর্ধক ও পেশি গঠনমূলক ব্যায়াম সর্বদা শরীরকে চাঙ্গা ও সার্বিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে।

স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভাস: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সব থেকে জরুরি আপনার খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনা। এই খাদ্যাভাসে পরির্তন আনার মাধ্যমেই আপনি আপনার ডায়াবেটিসকে খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন। আপনি খাবারের পাশাপাশি আপনাকে কম পরিশোধিত শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট ধরণের খাবার গ্রহনে সচেতন থাকতে হবে। এছাড়াও চর্বি জাতীয় মাংস, বিভিন্ন রকম ফলমূল, সবজি সেই সাথে মিষ্টিয় জাতীয় খাবার পুরোপুরি এড়িয়ে চলা। এছাড়া আপনাকে ৩ বেলার খাবারই নিয়ম-মাফিক ও পরিমান মতো খেতে হবে। সকাল ও রাতে রুটি এবং দুপুরে ভাত তবে ৩ বেলায় পরিমাণমতো।

আরো পড়ুনঃ সেনসেটিভ ত্বকের ব্রণ দূর করার ৮ টি গোপন টিপস

ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ: ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করা শরীরের পক্ষে সবথেকে জরুরি একটি বিষয়। আমরা অনেকেই জানি না মানসিক চাপ রক্তের শর্করার মাত্রাকে প্রভাবিত করে যা আমাদের হরমোনের প্রতিক্রিয়া বাড়িয়ে গ্লোুকোজের পরিমান বাড়িয়ে দেয়। বিশ্রাম ও কর্মজীবনের ভারসাম্য রক্ষা করায় আপনার মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে সহয়তা করবে।

আর্দ্রতা বজায় রাখা: আপনার শরীরের পানির পরিমান বজায় রাখতে হবে। কারণ ডায়াবেটিসে আপনার শরীরের পানি ঘাম ও প্রসাবের সাথে বের হয়ে যায় সেইক্ষেত্রে আপনাকে বিশেষভাবে আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পানি দেহের পানিশূণ্যতা কমায়, কিডনী সক্রিয় রাখে এবং আপনার রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ সাহায্য করে।

কার্বহাইড্রেট গ্রহনে সতর্কতা: আপনি যখনই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার গ্রহন করবেন তখনই আপনার শরীরের সরাসরি শর্করার ওপর প্রভাব ফেলবে। আপনি যদি চিরতরে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাহলে আপনাকে এই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার চিরতরে আপনার খাদ্যাভাস থেকে বাদ দিতে হবে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ: ওজন নিয়ন্ত্রণ ডায়াবেটিস কমানোর অন্যতম হাতিয়ার। ওজন বেশি বা কম হলে সামান্যতম ওজন হ্রাস রক্তের শর্করা ও ইনসুলিন সংবেদনশীলতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই ওজন কমাতে আপনাকে অবশ্যই শরীরচর্চা করতে হবে।

পর্যাপ্ত ঘুম: সুস্থ থাকার জন্য ঘুমের বিকল্প কোন কিছু নেই। আপনি যদি ঠিকঠাকভাবে না ঘুমান তাহলে আপনার সারাদিনটা খুব ভালো একটা যাবে না। একজন স্বাভাবিক মানুষের জন্য প্রতিদিন ৭-৯ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। আপনি যদি পরিমান মতো না ঘুমান তাহলে আপনার শরীরের শর্করার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণর আপনাকে প্রতি রাতে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।

ডায়াবেটিসে যে সকল খাবার এড়িয়ে চলবেন

ডায়াবেটিসে যে সকল খাবার এড়িয়ে চলবেন তা জানা অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়। ডায়াবেটিসে সবথেকে বড় ভূমিকা পালন করে খাদ্য। এই ডায়াবেটিস হয় মূলত খাদ্যকে কেন্দ্র করে। তাই খাদ্যভাসে পরিবর্তন আনলে আপনার শরীরের ডায়াবেটিস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তাহলে চলুন জেনে আসি কীভাবে ডায়াবেটিস দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন।

  • উচ্চ প্রক্রিয়াজাত সাদা আটা খুব দ্রুত শক্তি জোগালেও অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত করার কারণে পুষ্টি উপাদান কমে যায়। আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই আটা এড়িয়ে চলবেন। অবশ্যই লাল আটা খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এই সাদা রয়েছে শ্বেতসার। যদিওবা প্রায় সব শস্যেই শ্বেতসার বেশি পরিমাণেই থাকে কিন্তু সাদা আটাতে একটু বেশি পরিমাণে থাকে। যার জন্য সাদা আটা সমপূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে। 

  • আমরাজানি শরীরের জন্য প্রোটিন অনেকটাই জরুরী। কিন্তু এই প্রোটিনের পরিমান যদি বেশি হয়ে যায় তাহলে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। প্রোটিন জাতীয় যেমন: গরুর মাংস, ভেড়ার মাংস ইত্যাদি উচ্চ প্রোটিন যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। এইসবের পরিবর্তে শিম, বাদাম থেকে প্রোটিন গ্রহন করতে পারবেন।

  • আলু ডায়াবেটিসে অনেক প্রভাব ফেলে কারণ আলুতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় শ্বেতসার ও গ্লাইসেমিক। আর এই গ্লাইসেমিক উপাদান ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়। এইজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের আলু না খাওয়াই ভালো।

  • কোমল পানীয় ও এনার্জি ড্রিংকস পরিহার করা উচিত। এই এনার্জি ড্রিংকসে উচ্চমাত্রায় কৃত্রিম মিষ্টিদ্রব্য ও ক্যাফেইন মেশানি থাকে। যা খাওয়ার পর আপনার শরীরের দীর্ঘ সময় ইনসুলিনের মাত্রা বাড়তি থাকতা পারে। তাই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে অবশ্যই এইসকল জিনিস পরিহার করতে হবে।

  • কিশমিশ, শুকনো বেরি ফল এইসব পরিহার করতে হবে। কারণ এইসবে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যদিও এটি থাকা ভালো তবে এগুলোতে প্রাকৃতিক চিনি ও উচ্চ ক্যালোরিও  রয়েছে। যা ডায়াবেটিসের জন্য মারাত্মক ক্ষতি।

  • ফলের জুস আপনার শরীরের ডায়াবেটিসের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। মিষ্টিজাতীয় ফল ছাড়া অন্য ফলগুলো রস খেতে পারবেন।

  • দুগ্ধজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো হবে। কারণ এতে রয়েছে ফুল ফ্যাট যা আপনার শরীরের গ্লুকোজের পরিমান বাড়িয়ে দিবে সেইসাথে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে। 

  • আমরা ভুট্টা অনেকেই খেয়ে থাকি। এই ভিট্টায় রয়েছে ভিটামিন, খাদ্য আঁশ ও মিনারেল। যদি এই তিনটির পরিমান বেড়ে যায় তাহলে আপনার গ্লুকোজের পরিমাণ পরিমাণ বেড়ে যাবে। তাই ভিট্টাও পরিহার করতে হবে।
দ্রুত-ডায়াবেটিস-নিয়ন্ত্রন-করার-উপায়-চিরতরে-কীভাবে-ডায়াবেটিস-নিরাময়-করবেন1

ডায়াবেটিস কমানোর ৫টি ঘরোয়া উপায়

ডায়াবেটিস কমানোর ৫টি ঘরোয়া উপায় রয়েছে যা আপনি ঘরে বসেই করতে পারবেন। ডায়াবেটিস থাকলে অবশ্যোই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ওষুধ খেতে হবে তার পাশাপাশি আপনাকে কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চলতে হবে। এর ফলে আপনার ডায়াবেটিস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক ডায়াবেটিস কমাতে কোন ৫টি ঘরোয়া উপায় মানতে হবে।

আদা: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে আদার ওপর ভরসা রাখতে পারেন। এই আদায় রয়েছে অনেক ধরণের গুন। আদা আপনার শরীরের শর্করার পরিমান নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ইনসুলিনের পরিমাণ বজায় রাখে। আদা শুধুমাত্র তরকারিতে খেলে হবে না কাঁচা আদা অথবা চায়ের সাথে মিশিয়ে আদা চা খেতে পারেন।

করলা: যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য অবশ্যই করলা খাওয়া জরুরি। করলাতে রয়েছে মোমোরডিসিন ও চ্যারিটিন। এই দুইটি উপাদান রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে। যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তারা করলার রস খেতে পারেন। এই করলার রস খালি পেটে খেতে পারেন অথবা ভাতের সাথে সিদ্ধ করে থেতে পারেন। প্রতিদিন এইভাবে খেলে আপনি খুব দ্রুত ভালো ফল পাবেন।

অ্যাপল সাইডার ভিনিগার: আপনি যখন সারারাত খালি পেটে থাকবেন তখন সকাল হলে আপনার শরীরে শর্কারার পরিমাণ হালকা বেড়ে যায়। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুই চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার খেতে পারেন। যার ফলে আপনার আর শর্কারার পরিমান বাড়তে পারবে না।

আরো পড়ুনঃ ছেলেদের তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কোন ব্র্যান্ড এর ফেইসওয়াশ ও ক্রীম ভালো

জাম: আপনারা অনেকেই জানেনে ডায়াবেটিস হলে সব ধরণের ফল খাওয়া যায় না। কিছু ফল আছে যেগুলোর জিআই অনেক বেশি। এরমধ্যে জাম অন্যতম। এই ফলটি আপনার শরীরের অনেক উপকার করবে। এছাড়া জামে্র বীজের গুঁড়া পানির সাথে খালি পেটে খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে আপনার শর্কারার পরিমাণ।

আমলকি: আমলকি আপনার শরীরে ডায়াবেটিস কমাতে সবথেকে ভালো ভূমিকা রাখে। আমলকিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি আপনি যদি অমলকি খান তাহলে আপনার শরীরের শর্করার পরিমান নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 

খালিপেটে ডায়াবেটিস মাপার নিয়ম

আমরা যারা ডায়াবেটিসের রোগী তাদের জন্য প্রতিদিন ডায়াবেটিস মাপা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। আর এই কাজের জন্য কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়। তারমধ্যে খালি পেটে ডায়াবেটিস মাপাটা অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। খালিপেটে ডায়াবেটিস মেপে সে অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়াটা জরুরি। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কীভাবে খালিপেটে ডায়াবেটিস মাপবেন।

খালিপেটে ডায়াবেটিস মাপার আগে অন্তত ৮ থেকে ১০ ঘন্টা আগে কিছু খাওয়া যাবে না। অর্থাৎ সবথেকে ভালোসময় সকালে ঘুম থেকে উঠে পরীক্ষা করা। আপনি পানি পান করতে পারবেন তবে অন্য কোন খাবার খাওয়া যাবে না। তবে কফি, জুস, চা এইসব পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। প্রথমত আপনাকে গ্লুকোমোটার ও টেস্ট স্ট্রিপগুলো প্রস্তুত রাখতে হবে। আর যে পরীক্ষা করবে তার হাত সাবান দিয়ে জীবানুমুক্ত করে রাখতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ ঘরে বসে মাশরুম চাষ করার ১০টি কার্যকরী ট্রিকস ও লাখ টাকা আয়ের গ্যারেন্টি

এরপর ল্যানসেট ব্যবহার করে আঙ্গুলের সামনে একটি ছিদ্র করে নিতে হবে। প্রথম ফোঁটা রক্তটি মুছে ফেলুন এরপর দ্বিতীয় ফোঁটা রক্ত টেস্ট স্ট্রিপে লাগিয়ে নিন। এরপর টেস্ট স্ট্রপটি গ্লুকোমিটারে প্রবেশ করান। কয়েক সেকেন্ড পর সুগারেরে পরিমাণ দেখাবে। সাধারণট খালিপেটে সুগারের পরিমাণ ৭০ থেকে ৯৯ মিলিগ্রাম/ডেসসিলিটার (৫.৭ এর নিচে) থাকে। ১০০ থেকে ১২৫ মিলিগ্রাম/ডেসসিলিটার (৫.৭ থেকে ৬.৫) হলে ডায়াবেটিক অবস্থা এবং ১২৬ মিলিগ্রাম/ডেসসিলিটার(৬.৫ এর বেশি) হলে ডায়াবেটিসে লক্ষণ।

ভরাপেটে ডায়াবেটিসের মাপার নিয়ম 

ভরাপেটে ডায়াবেটিস মাপার জন্য সাধারণত আপনাকে খাবার খাওয়ার ২ ঘন্টা পর মাপতে হবে। ভরাপেটে ডায়াবেটিস মাপার পরীক্ষা করাকে বলা হয় পোস্টপ্র্যান্ডিয়াল গ্লুকোজ টেস্ট। সাধারণত খাওয়ার ২ ঘন্টা পর আপনার গ্লোকোজের মাত্রা নরমাল থাকে। যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের ডায়াবেটিসের মাত্রা সাধারণত ৭০ থেকে ১৪০ মিলিগ্রাম/ডেসসিলিটার থাকে। যদি আপনার ডায়াবেটিসে মাত্রা ১৪০ মিলিগ্রাম/ডেসসিলিটার (৫.৭ এর নিচে) এর নিচে থাকে তাহলে আপনার ডায়াবেটিস নরমাল।

দ্রুত-ডায়াবেটিস-নিয়ন্ত্রন-করার-উপায়-চিরতরে-কীভাবে-ডায়াবেটিস-নিরাময়-করবেন2

ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হওয়ার পরে যেভাবে যত্ন নিবেন

ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হওয়ার পরে যেভাবে যত্ন নিবেন তা জানা অত্যন্ত জরুরী। আপনাকে ওষুধে আবার ফিরে যেতে হবে না সেটা নিশ্চিতকরণের জন্য আপনাকে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রায় বেশি ফোকাস রাখতে হবে। আপনার ডায়াবেটিসের পরিমান নিয়মিত লক্ষ্য রাখা অতীব জরুরি। উপরের নিয়মগুলো মেনে পদক্ষেপ অনুসরণ করে ওষুধ ছাড়াও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবুও নির্দিষ্ট সময় ব্যবধাণে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ও সে অনুযায়ী চলার প্রয়োজনীতাকে উপেক্ষা করার কোন অবকাশ নাই।

আমাদের শেষকথা       

প্রিয় পাঠক, আশাকরি আজকের প্রতিপাদ্য বিষয় দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করার উপায়-চিরতরে কীভাবে ডায়াবেটিস নিরাময় করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। আপনি নিজেই এখন থেকে ডায়াবেটিস কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন কীভাবে নিজের ডায়াবেটিস নিজে মাপবেন এবং কত মাত্রায় স্বাভাবিক সকল কিছু জেনে নিয়েছেন। আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে উপরের বিষয়গুলো মেনে চলবেন। খুব দ্রুত সময়ে আপনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

এইরকম আরো তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। কারণ আমরা আমদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরণের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।   

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আবির ইনফো টেকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url