গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া বোঝার ১০ টি উপায় - বাচ্চা নড়াচড়া কম হলে করণীয়
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া বোঝার উপায় মায়েদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এটি শুধু মায়ের জন্যই নয়, বরং বাচ্চার সুস্থতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কি বাচ্চার নড়াচড়া অনুভবের উপায় ও নড়াচড়া না করলে করনীয় কি তা জানতে চাচ্ছেন? আপনি একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন।
আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো, গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া বোঝার উপায়, নড়াচড়া না করলে করনীয় কি, কোন সময় বাচ্চা করে, বাচ্চার নড়াচড়া কমে যাওয়ার কারণ সকলকিছু বিস্তারিত জানবো। আশাকরি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ে উপকৃত হবেন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া বোঝার ১০ টি উপায় - বাচ্চা নড়াচড়া কম হলে করণীয়
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া কখন বোঝা যায়
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া কখন বোঝা যায় এটি জানা জরুরি একটি বিষয়। প্রত্যেক মায়ের উচিত তিনি যেন সময় নিয়ে গর্ভের শিশুর নড়াচড়া করার নিজস্ব ধরণগুলোর ব্যাপারে পরিচিত হন। গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া সাধারণত ১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবারের মতো অনুভব করা যায়। প্রথমবার মা হলে, এটি একটু দেরিতে অনুভব হতে পারে। প্রথম দিকে নড়াচড়া হালকা ঝাঁকুনির মতো অনুভূত হয়, যা সময়ের সাথে সাথে আরও স্পষ্ট এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
এই ১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে ভ্রুণের নড়াচড়া কারণে পেটের ভেতরে বুদবুদ ওঠার মতো বা কিছু একটা উড়ে বেড়াচ্ছে এমন মনে হতে পারে। তবে গ্যাস বা বদহজমের কারণেও এমনটা হয়ে থাকে। যারা প্রথমবার গর্ভধারণ করে তারা বাচ্চার মুভমেন্ট বুঝতে একটু সময় নেয়। যখন আপনি শুয়ে থাকবেন বা বসে থাকবেন তখন সাধারণত বাচ্চার নড়াচড়া বেশি বোঝা যায়। যখন হাটবেন না নড়াচড়া করবেন তখন মুভমেন্ট তেমন বোঝা যায় না।
আরো পড়ুনঃ শিশুদের ঘন ঘন জ্বর আসার ৭টি লক্ষণ ও অভিভাকের করণীয়
আপনাকে কেউ কেউ বলতে পারে গর্ভাবস্থার শেষ দিকে এবং প্রসবের আগ পর্যন্ত শিশু কম নড়াচড়া করবে। এই কন্সেপ্টটি বা ধারণাটি একদমই ভুল। মনে রাখবেন বাচ্চার নড়াচড়া অন্যরকম হতে পারে তবে কতটা ঘন ঘন নড়াচড়া করবে তাতে কোন পরিবর্তন আসার যৌক্তিক কারণই নেই। বাচ্চা গর্ভাবস্থার শেষ পর্যন্ত এমনকি প্রসব চলাকালীন সময়েও গর্ভের শিশু নড়তে থাকবে। আবার বাচ্চা যে সারাদিনে নির্দিষ্ট সংখ্যকবার নড়াচড়া করবে বিষয়টি এমনও নয়। একটি বিশেষ সময় রয়েছে যখন বাচ্চা নড়াচড়া করে। আর সেই সময়টি হলো বিকেল ও সন্ধ্যায়।
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া বোঝার ১০টি উপায়
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া বোঝার ৭টি উপায় সম্পর্কে জানলে আপনি একটি স্বচ্ছি ধারণা পেয়ে যাবেন। গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া অনুভব করা একটি অত্যন্ত আনন্দদায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা। যেহেতু বাচ্চার নড়াচড়া করার বিষয়গুলো লক্ষ্য করা একজন মায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক একজন মায়ের গর্ভাবস্থায় বাচ্চা নড়াচড়া বোঝার ৭টি উপায় জেনে নিই-
- নড়াচড়া অনুভবের সপ্তাহ: গর্ভাবস্থার ১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহ অর্থাৎ ৪.৫ মাস থেকে ৬ মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো বাচ্চার নড়াচড়া অনুভব করা যায়। প্রথমবার মা হলে, এটি একটু দেরিতে অনুভব হতে পারে।
- বাচ্চার নড়াচড়া গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা: প্রথম দিকে নড়াচড়া হালকা ঝাঁকুনির মতো অনুভূত হয়। সময়ের সাথে সাথে এটি আরও স্পষ্ট এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠে। বাচ্চার লাথি, হাত-পা নাড়ানো, এবং ঘুরে বেড়ানো অনুভব করা যায়। যখন বাচ্চা
- বাচ্চা নড়াচড়ার সময়: বাচ্চারা সাধারণত বিকেল এবং সন্ধ্যায় বেশি নড়াচড়া করে। তবে, মায়ের সচল অবস্থায় নড়াচড়া কম অনুভূত হতে পারে। যখন বাচ্চা ঘুমিয়ে থাকে তখন নড়াচড়ার পরিমান টের পাওয়া যায় না। এই সময়কে বলে স্লীপ সািকেল বলে।
- বাচ্চা নড়াচড়ার পরিমাণ: প্রতিদিন বাচ্চার নড়াচড়ার পরিমাণ এবং ধরন লক্ষ্য রাখা উচিত। যদি নড়াচড়ার পরিমাণ হঠাৎ কমে যায় বা পরিবর্তন হয়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
- নড়াচড়ার সংখ্যা: প্রতিদিন বাচ্চার নড়াচড়ার সংখ্যা গুনে রাখা উচিত। সাধারণত একজন মা ২ ঘন্টার মধ্যে ১০ বার নড়াভড়া অনুভব করতে পারে।
- বচ্চার নড়াচড়া কম হলে করণীয়: যদি বাচ্চার নড়াচড়া কম অনুভব করেন, তবে কিছুক্ষণ শুয়ে বিশ্রাম নিন এবং বাচ্চার নড়াচড়া লক্ষ্য করুন। যদি এখনও কম মনে হয়, তবে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
- বাচ্চা নড়াচড়া প্রভাবিত করতে পারে এমন কারণ: প্লাসেন্টার অবস্থান প্লাসেন্টা সামনে থাকলে নড়াচড়া কম অনুভূত হতে পারে। মায়ের ওষুধ কিছু ওষুধের কারণে নড়াচড়া কম হতে পারে। শ্বাসকষ্ট বাচ্চার শ্বাসকষ্ট হলে নড়াচড়া কমে যেতে পারে।
- নিয়মিত চেকআপ: নিয়মিত চেকআপের মাধ্যমে বাচ্চার নড়াচড়া এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। ডাক্তার আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে বাচ্চার নড়াচড়া এবং হার্টবিট পরীক্ষা করতে পারেন। গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া বোঝা এবং তা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা মায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি বাচ্চার সুস্থতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে এবং মায়ের মানসিক শান্তি বজায় রাখে।
- মৃদু চাপ প্রয়োগ: পেটের উপর মৃদু চাপ প্রয়োগ করলে শিশুর নড়াচড়া অনুভব করা যেতে পারে। আবার কিছু হালকা খাবার খাওয়ার পরও শিশুর নড়াচড়া বাড়তে পারে। এছাড়া ঠান্ডা পানি পান করলে শিশুর নড়াচড়া বাড়তে পারে।
- শান্ত পরিবেশে বিশ্রাম: শান্ত পরিবেশে শুয়ে বা বসে শিশুর নড়াচড়া অনুভব করার চেষ্টা করুন।
গর্ভাবস্থায় সপ্তাহ অনুযায়ী বাচ্চার নড়াচড়ার ধরণ
সপ্তাহ অনুযায়ী বাচ্চার নড়াচড়ার ধরণ পরিবর্তন হয়ে থাকে। আমরা আগেই জেনেছি, যে সকল মা প্রথম গর্ভধারণ করে তাদের বাচ্চা নড়াচড়া অনুভব করতে সময় লাগে ১৮ থেকে ৩৪ সপ্তাহ। আর যারা দ্বিতীয়বার গর্ভধারণ করে তারা মূলত ১৬ সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চার নড়াচড়া পর্যবেক্ষণ করতে পারে। সময়ের সাথে সাথে বাচ্চার মুভমেন্ট পরিবর্তন হতে থাকে। কীভাবে সময়ের সাথে সাথে বাচ্চার নড়াচড়ার ধরণ পরিবর্তন হয় এখন আমরা বিস্তারিত জানবো-
১৬ থেকে ২০ সপ্তাহে বাচ্চার অবস্থা: এই সময়ে বাচ্চা নড়াচড়া খুব হালকা এবং মৃদু হতে পারে। অনেক মা এটিকে “বাবল” বা “ফ্লাটারিং” হিসেবে বর্ণনা করেন। ২০ সপ্তাহ পার অতিক্রম করার সাথে সাথে বাচ্চার নড়াচড়া আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই সময় আপনার বাচ্চা দেখতে প্রায় একটি কামরাঙ্গার সমান হয়ে থাকে। বেশিরভাগ বাচ্চার ওজন থাকে ১০০ গ্রাম। ১৬ সপ্তাহে বাচ্চার দৈর্ঘ্য থাকে ১১ থেকে ১২ সে.মি এর মধ্যে। ধীরে ধীরে বড় হয়ে ২০ সপ্তাহে বাচ্চা প্রায় একটি শসার সমান হয়ে যায়। এই সময় বাচ্চার ওজন থাকে ৩০০-৩৫০ গ্রাম। বাচ্চার দৈর্ঘ্য থাকে ২৫সে.মি - ২৫.৬ সে.মি.।
২০ সপ্তাহ থেকে ২৪ সপ্তাহে বাচ্চার অবস্থা: এইসময় বাচ্চা নড়াচড়া আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আপনি ছোট ছোট লাথি বা ঝাঁকুনি অনুভব করতে পারবেন। ২৪সপ্তাহে এসে দেখবেন বাচ্চা মাথা থেকে পয়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৩০ সে.মি. লম্বা হয়ে গিয়েছে। বাচ্চা দেখতে অনেকটা ডাবের সমান হয়ে যাবে। এই সময় বাচ্চার ওজন হবে প্রায় ৬০০ থেকে ৬৫০ গ্রাম এর কাছাকাছি।
২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহে বাচ্চার অবস্থা: এই সময়ে বাচ্চার নড়াচড়া আরও শক্তিশালী এবং নিয়মিত হয়। এই সময় আপনি বাচ্চার নড়াচড়ার একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন লক্ষ্য করতে পারেন। যা প্রতিনিয়ত অনুভব করার জন্য সুবিধা হবে। যখনই একটি নির্দিষ্ট প্যার্টানে বাচ্চা নড়াচড়া করবে তখনই আপনার জন্য অনুভব করাটা সহজ হবে এই সময় বাচ্চা দেখতে অনেকটা চিচিঙ্গার সমান হয়ে থাকে। তখন বাচ্চার আনুমানিক দৈর্ঘ্য হয় ৩৭সে.মি থেকে ৩৭.৬ সে.মি. পর্যন্ত। আর বাচ্চার ওজন হয় প্রায় ১ কেজি।
২৮ থেকে ৩২ সপ্তাহে বাচ্চার অবস্থা: ২৮ থেকে ৩২ সপ্তাহে বাচ্চার নড়াচড়া সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। আপনি পেটের বিভিন্ন স্থানে নড়াচড়া অনুভব করতে পারেন। মনে হবে পেটের মধ্যে মাছের মতো কিছু একটা নড়াচড়া করছে। এই সময় বাচ্চা দেখতে ৩টি বড় মাপের গাজর একসাথে করলে যেমন হয় ঠিক ওই সমান বাচ্চা হয়। বাচ্চা দেখতে প্রায় ৪২সে.মি থেকে ৪২.৪ সে.মি এর মধ্যে হয়ে থাকে। আর বাচ্চার ওজন হয় মূলত ১.৫ থেকে ১.৭ কেজি।
আরো পড়ুনঃ সর্দি, কাশিতে ঘরোয়া সমাধান - সর্দি কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায়
গর্ভাবস্থায় বাচ্চা নড়াচড়া কমে যাওয়ার কারণ
গর্ভাবস্থায় বাচ্চা নড়াচড়া কমে যাওয়ার বেশ কিছু যৌক্তিক কারণ রয়েছে। সাধারণ ভাবে বলা যায় যখন মায়ের পেটে অক্সিজেন লেভেল কমে যায়, মায়ের শরীরে রক্তশূণ্যতা দেখা দেয় এই সকল কারণ গুলো সহ আরো অনেক ধরণের কারণ আছে। যা আমাদের বিস্তারিত জানতে হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় বাচ্চা নড়াচড়া কমে যাওয়ার কারণ-
ভ্রূণের ঘুমের চক্র অর্থাৎ বাচ্চারা গর্ভে ঘুমের চক্রের মধ্য দিয়ে যায়, যা ২০ থেকে ৪০ মিনিট বা তার বেশি সময় স্থায়ী হতে পারে। কখনো কখনো এটা ৯০ মিনিটও হয়। তবে ৯০ মিনিটের বেশি হওয়ার কথা না। এই সময়ে, তারা ততটা নড়াচড়া করতে পারে না। এরফলে মায়েরা কোন ধরণের অনুভব করতে পারে না। এছাড়া যদি প্লাসেন্টা অর্থাৎ গর্ভফুল যদি সামনের দিকে চলে আসে তখন বাচ্চার নড়াচড়া অনুভব করতে সমস্যা হতে পারে।
বাচ্চার অবস্থান পরিবর্তন হওয়ার কারণেও অনেকসময় নড়াচড়া অনুভব করা যায় না। আবার জরায়ুর পানি অতিরিক্ত কমে গেলে বাচ্চার নড়াচড়া কমে যায়। এছাড়াও মায়ের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা বা বাচ্চার শ্বাসকষ্ট হলে অনেক সময় বাচ্চার নড়াচড়া কমে যায়। এগুলো মূলত স্বাভাবিক কারণ। বাচ্চার নড়াচড়া ১৮ সপ্তাহের মধ্যে নাও অনুভব করতে পারেন এতে ভয়ের কোন কারণ নেই। আপনি মূলত স্পষ্টভাবে বুঝবেন ২৮ থেকে ৩৬ সপ্তাহের মধ্যে। তাই প্রথম দিকে বাচ্চার কম নড়াচড়া করা এটা স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া।
গর্ভাবস্থায় বাচ্চা নড়াচড়া কম হলে করণীয়
গর্ভাবস্থায় বাচ্চা নড়াচড়া কম হলে করণীয় অনেক মায়েরা জানতে চান। বাচ্চা নড়াচড়া না করলে মায়েরা বিশেষ করে অনেক হাইপার হয়ে যায়। আমরা পূর্বের হেডিং এ জেনেছি বাচ্চা প্রথমদিকে কম নড়াচড়া করা এটা স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। তবে ধীরে ধীরে যেহেতু বাচ্চার নড়াচড়া বাড়তে থাকে। সেহেতু বাচ্চা যদি একটি নির্দিষ্ট সময় পর নড়াচড়া না করে তাহলে এই বিষয়টা একটু চিন্তার হয়ে পড়ে। চলুন জেনে নেয়া যাক বাচ্চা নড়াচড়া কম হলে একজন মায়ের করণীয় কি-
নিজেকে শান্ত রাখুন ও বাচ্চার নড়াচড়া পর্যবেক্ষণ করুন: প্রথমত নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। কোনরকম মানসিক চাপ নেওয়া যাবে না। এরফলে আপনার শরীরের দিকে খারাপ ইমপ্যাক্ট পড়বে। কখনো কখনো বাচ্চাদের শান্ত মাসিক হয়। তখন আপনি শান্ত একটি রুমে শুয়ে বাচ্চার নড়াচড়ার গতিবিধ পর্যবেক্ষণ করুন। নড়াচড়ার প্যাটার্ন বা ফ্রিকোয়েন্সিতে কোন পরিবর্তন আসছে কিনা তা লক্ষ্য করার চেষ্টা করুন।
পজিশন পরিবর্তন করুন: শান্ত ও নিড়িবিলি পরিবেশে শুয়ে বাচ্চার নড়াচড়া অনুভব করার চেষ্টা করুন। দুপুরে খাওয়ার পর বাম দিকে ঘুরে কমপক্ষে ২ ঘন্টা শুয়ে থাকুন এবং ওই ২ ঘন্টায় নড়াচড়া অবুভব করে কাউন্ট করতে পারেন। এই সময় সম্পূন্ন মনোযোগ আপনার বাচ্চার নড়াচড়ার উপর থাকবে। অন্য কোনদিকে কনসেন্ট্রেশন করবে না। যদি সম্ভব হয় কাগজে নড়াচড়ার সংখ্যাটা নোট করে রাখুন। বাচ্চা যদি দিনে ১০ থেকে ১২ বারের কম নড়াচযা করে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
হাইড্রেশন ও খাবার: পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং হালকা খাবার খান। কিছু মিষ্টি খেলে বাচ্চার নড়াচড়া বাড়তে পারে।
ডাক্তারের পরামর্শ: আপনি পর্যবেক্ষণ করার পরে যদি দেখেন আপনার বাচ্চা নড়াচড়া করা বন্ধ করে দিয়েছে বা স্বাভাবিকের তুলনায় সেইরকম নড়াচড়া করছে না। তাহলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। আবার যদি দেখেন প্রতিদিন যে তুলনায় আপনার বাচ্চা নড়াচযা করে সেই তুলনায় নড়াচযড়া করছে তাহলেও দেরি না করে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সাহায্যের জন্য পরের দিনের অপেক্ষা করবেন না।
আজকের পোস্ট বিষয়ক সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
১। বাচ্চার নড়াচড়া কবে থেকে অনুভব করবেন?
উত্তরঃ বাচ্চার নড়াচড়া সাধারণত ১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে অনুভূত হতে পারে। কখনো কখনো এটা ১৬ সপ্তাহেও হতে পারে।
২। বাচ্চার নড়াচড়া কম হলে কী করবেন?
উত্তরঃ বাচ্চার নড়াচযা কম করলে কিছু বিষয় অনুভব করার চেষ্টা করুন-
পর্যবেক্ষণ করুন: বাচ্চার নড়াচড়ার ধরন এবং সংখ্যা পর্যবেক্ষণ করুন। সাধারণত, দিনে ১০ বার নড়াচড়া অনুভব করা উচিত।
বিশ্রাম নিন: শুয়ে বিশ্রাম নিন এবং বাচ্চার নড়াচড়া অনুভব করার চেষ্টা করুন।
ডাক্তারকে জানান: যদি বাচ্চার নড়াচড়া স্বাভাবিকের চেয়ে কম মনে হয়, তাহলে দ্রুত আপনার ডাক্তারকে জানা
৩।বাচ্চার নড়াচড়া কী কী কারণে প্রভাবিত হতে পারে?
উত্তরঃ বাচ্চার নড়াচড়া বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে প্রভাবিত হয়। এর মধ্যে প্রধান ৩টি কারণ হলো: মায়ের ওষুধ, মায়ের খাদ্যাচাস ও গর্ভফুলের অবস্থান।
আমাদের শেষকথা
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা জানলাম, গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া বোঝার ১০ টি উপায়, নড়াচড়া কম করলে করনীয় গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়ার সকল বিষয় আসয় । বিষয়গুলো খুব গভীরভাবে পর্যালোচনা করবেন সেই সাথে বাচ্চার অবস্থান অর্থাৎ বাচ্চা নড়াভড়া কেমন করছে, বাচ্চার নড়াচড়ার প্যাটার্ন কতটুকু পরিনর্তন হচ্ছে সকল কিছু খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের এই বিষয়ক তথ্য আপডেট করার জন্য কাজ চলছে। আরো অনেক তথ্য এই আর্টিকেলে জানিয়ে দিব।
এইরকম আরো তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। কারণ আমরা আমদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরণের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
আবির ইনফো টেকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url