শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫ - শবে মেরাজের নামজের নিয়ম
শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫ লিখে গুগোলে অনেকেই সার্চ করেছেন। আপনি কি শবে মেরাজের নামাজের নিয়ম , নিয়ত, কয়টি রোজা, নামাজে কোন সূরা পড়তে হয় তা জানতে চান? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকের আমরা শবে মেরাজের সকল কিছু নিয়ে আলোচনা করব।
আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো, শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫, শবে মেরাজের নামজের নিয়ম, শবে মেরাজের নামাজ কয় রাকাত, শবে মেরাজের নিয়ত, সবে মেরাজ কীভাবে সংঘটিত হলো। সকল কিছু নিয়ে বিস্তারির আলোচনা করব আজকের এই আর্টিকেলে। আশাকরি শেষ পর্যন্ত পড়ে উপকৃত হবেন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫ - শবে মেরাজের নামজের নিয়ম
- নবীজি মেরাজে যাওয়ার ঘটনা
- নবীজির মেরাজ থেকে ফেরার ঘটনা
- শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫
- শবে মেরাজের নামাজের নিয়ত
- শবে মেরাজের নামাজের নিয়ম
- শবে মেরাজের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয়
- শবে মেরাজের রোজা কয়টি
- শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
- শবে কদরের রাতের আমল, নামাজ, রোজা, নিয়ত করা যাবে কি?
- আজকের পোস্ট বিষয়ক সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
- আমাদের শেষকথা
নবীজির মেরাজে যাওয়ার ঘটনা
নবীজির মেরাজের যাওয়ার অনেক আকস্মিক একটি বিষয়। হিজরতের আগের কথা। একদা এক রাতে নবী মুহাম্মদ(সা.) শুয়ে ছিলেন। তাঁর চোখে ঘুম ঘুম ভাব। কিন্তু হৃদয়-জ্ঞন জাগ্রত ছিল। তাঁর চোখ দুটি হালকা লেগে এসেছিল। এমতঅবস্থায় হযরত জিবরাইল (আ.) আগমন ঘটে। মক্কা থেকে নবীকে উঠিয়ে জমজমের নিকটে তাঁকে রাখা হলো। এই সময় হযরত জিবরাইল (আ.) নবী মুহাম্মদ(সা.) এর সিনাচার করলেন। অর্থাৎ তাঁর বুক চিড়ে ফেললেন। ইংরেজিতে আমরা যেটিকে বলি ওপেন হার্ট সার্জারি।
বিশ্বনবীর জীবনে এটি দুইবার হয়েছে। হালিমাতুস সাদিয়ার বাড়িতে যখন দুধ পান করতে গিয়েছিলেন তখন আর একবার মেরাজের রাতে। অতঃপর নবীর গলা নিচ থেকে নাভি পর্যন্ত বুকটাকে কেটে ফেললেন। এরপর নবীর হৃদয়টাকে বের করে আনা হলো। জমজমের পানি দিয়ে হৃদয়টাকে ধৌত করলেন এবং আবার আগের মতোই প্রতিস্থাপিত করে দিলেন।
বায়তুল মুকাদ্দাসে নবী মুহাম্মদ(সা.) এর আগমন
নবীজিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আনা হলো একটি সাওয়ারী। নবীর ঠিকঠাক খেয়াল নেই।তবে তিনি অনুমান করে বলেছেন প্রাণিটি গাধার থেকে বড় আর ঘোড়ার থেকে ছোট। নাম ছিল বুরাক এবং রঙ ছিল সাদা। এটা ছিল একটি ক্ষিপ্র গতির প্রাণি যা এক ধাপ দিত চোখের দৃষ্টির শেষ সীমানা পর্যন্ত। মূহুর্তের মধ্যেই পৌঁছে গেলেন বায়তুল মুকাদ্দাসে। সেখানে গিয়ে বোরাককে একটি পাথর ছিদ্র করে বেঁধে রাখা হলো। এরপর নবী বায়তুল মুকাদ্দাসে দুইরাকাত সালাত আদায় করলেন। নবীজির নামাজ শেষে জিবরাইল (আ.) দুটি পেয়ালা পেশ করলেন।
একটিতে ছিল দুধ অপরটিতে ছিল শারাব। নবীর উম্মত যেন বিভ্রান্ত না হয় তাই তিনি দুধের পেয়ালা নির্বাচন করলেন। যখন নবীজি দুধের পেয়ালা নোর্বাচন করলেন তখন জিবরাইল (আ.) বলেন, "আপনি যদি শারাবের পেয়ালা নিতেন তাহলে আপনার উম্মত বিভ্রান্ত হয়ে পড়ত"। (বুখারি, হাদিস নং: ৩৩৯৪)।
আসমানে নবী মুহাম্মদ(সা.) এর আগমন
নবীজির যাত্রা শুরু হলো প্রথম আসমানের দিকে। প্রথম আসমানে পৌঁছালেন সেখানে দস্তক অর্থাৎ নক করলেন । প্রশ্ন করা হলো কে? বললেন জিবরাইল। আপনার সাথে কে? প্রতিউত্তরে বলা হলো আমার সাথে মুহাম্মদ। তার কাছে কি আপনাকে পাঠানো হয়েছে? জিবরাইল বললেন হ্যাঁ। এরপর নবীজিকে স্বাগত্ম করা হলো: মারহাবা, উত্তম আগমনকারীর আগমন ঘটেছে। নবীজির জন্য আসমানের দরজা খুলে দেওয়া হলো।
আরো পড়ুনঃ বাংলা ইংরেজি আরবি ক্যালেন্ডার ২০২৪
প্রথম আসমানে নবী মুহাম্মদ(সা.) এর আগমন
আসমানে প্রবেশের পর উর্ধ্ব জগতের দিকে সফর শুরু হলো নবী ও জিবরাইল (আ.) এর। প্রথম আসমানে পৌঁছালেন সেখানে হযরত আদম(আ.) ছিলেন। জিবরাইল (আ.) পরিচয় করিয়ে দিলেন নবীজিকে আদম(আ.) এর সঙ্গে। নবী মুহাম্মদ(সা.) আদম(আ.) কে সালাম দিলেন। আদম (আ.) নবী মুহাম্মদ(সা.) এর সালাম গ্রহন করলেম এবং নবীজিকে সাদরে অভিভাবদন জানালেন। অভিভাবদবে আদম(আ.) বললেন, মারহাবা নেককার পুত্র ও নেককার নবী। অতঃপর আদম(আ.) নবীজির জন্য দোয়া করলেন।
মুহাম্মদ(সা.) এর দ্বতীয় ও তৃতীয় আসমানে আগমন
নবী মুহাম্মদ(সা.) যখন দ্বতীয় আসমানে পৌঁছালেন সেখানেও দরজাে সম্মুখীন হতে হয়। পূর্বের মতোই তাদের আবারো জিজ্ঞাসাবাদ করের পরে দরজা খুলে দেওয়া হলো। সেখানেও নবীকে স্বাগতম জানানো হলো। যখন দ্বতীয় আসমানে পৌঁছালেন সেখানে দুই খালাতো ভাই হযরত ঈসা(আ.) ও হযরত ইয়াহিয়া(আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। তাঁদের সাথে নবী মুহাম্মদ(সা.) এর সালাম বিনিময় হয়। তাঁরা নবী মুহাম্মদ(সা.) কে সুস্বাগত জানান এবং বলেন- মারহাবা, আমাদের পুণ্যবান ভাই এবং সজ্জন নবী। তাঁরা নবীজির জন্য দোয়া করলেন।
এরপর আবারো তৃতীয় আসমানের দিকে উদয়মান হতে থাকে। সেখানেও দরজা ছিল। সেখানে আগের মতই প্রশ্ন করা হয়। উত্তর দেওয়া শেষে তাঁদের স্বাগতম জানানো হয়। তৃতীয় আসমানে হযরত ইউসুফ (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। সেখানেও সালাম বিনিময় হয়। নবীজি(সা.) বললেন, হযরত ইউসুফ (আ.) কে যেন দুনিয়ার অর্ধেক সৌন্দর্য এলে দেওয়া হয়েছে।
মুহাম্মদ(সা.) এর চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম আসমানে আগমন
মুহাম্মদ(সা.) এর চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম আসমানে আগমন ঘটে। সেখানেও প্রত্যেকটা আসমানে প্রবেশের পূর্বে আগের প্রশ্ন ন্যায় প্রশ্ন করা হয়। যখন নবী মুহাম্মদ(সা.) চতুর্থ আসমানের দরজায় প্রবেশ করলেন সেখানে হযরত ইদরীস (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। দুইজনের সালাম ও কুশল মিনিময় হয়। পঞ্চম আসমানে হযরত হারুন(আ.) এর এর সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময় হয়। এরপর ষষ্ঠ আসমানে দিকে আগমন ঘটে। সেখানে হযরত মূসা (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কুশল বিনিময় করলেন। হযরত মূসা(আ.) নবীজিকে খুব ইস্তেকবাল করলেন। এরপর সপ্তম আসমান অর্থাৎ শেষ আসমানের দিকে রওনা হলেন।
বাইতুল মামুর ও সিদরাতুল মুনতাহায় নবীজির আগমন
বাইতুল মামুর ও সিদরাতুল মুনতাহায় নবীজির আগমন ঘটলে সেখানে প্রথমে সাক্ষাৎ হয় হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর সঙ্গে। হযরত জিবরাইল (আ.) নবীজিকে পরিচয় করিয়ে দিলেন- ইনি আপনার পিতা, সালাম করুন। অতঃপর নবীজি হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর সঙ্গে সালাম বিনিময় করলেন। নবীজির বর্ণনা অনুযায়ী হযরত ইব্রাহিম (আ.) তখন বাইতুল মামুরে হেলান দিয়ে ছিলেন। বাইতুল মামুর এমন একটি জায়গা যেখানে প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেশতা আসে।
এরপর ওই সত্তর হাজার ফেরেশতা আর কখনো সেখান থেকে ফিরে যায় না। এভাবে সেখানে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কাফেলা আসতে থাকে। এরপর সেখান থেকে নবীজিকে নিয়ে যাওয়া হলো সিদরাতুল মুনতাহার দিকে। সেখানে তিনি একটি কুল অর্থাৎ বরই গাছ দেখতে পেলেন। আর সেই বরি গাছের একেকটি পাতা হাতির কানের সমান। আর একেকটি ফল মটকার মত বড় বড়। তখন হযরত জিবরাইল (আ.) বললেন এটি সিদরাতুল মুনতাহা।
নবীজির বর্ণনা অনুযায়ী সেখানে চারটি নহর ছিল। দুটি অদৃশ্য আর দুটি দৃশ্যমান। নবীজি জিজ্ঞাসা করলেন, দৃশ্যমান নহর বা নদী দুটি কোন গুলো? প্রতিউত্তরে জিবরাইল (আ.) বললেন, অদৃশ্যমান দুটি জান্নাতে আর দৃশ্যমান দুটি হলো নীলনদ ও ফুরাত নদ।
উম্মতের জন্য পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজে ফরজ এর উপহার
উম্মতের জন্য পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজে ফরজ এর উপহার পেলেন আল্লাহ তায়ালার নিকট থেকে। আল্লাহ তায়ালা ওহি পাঠালেন সেখানে দিনরাত মিলে আম্লাহ তায়ালা পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ উপহার দিলেন। নবীজি পঞ্চাশ ওয়াক্ত হাদিয়া নিয়ে ফিরে আসছিলেন। এমতঅবস্থায় দেখা হয় হযরত মূসা (আ.) এর সঙ্গে। তিনি নবীজিকে জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ আপনার উম্মাতের জন্য কি দিয়েছেন? নবীজি উত্তরে বললেন পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ। হযরত মূসা (আ.) বললেন, আপনার উম্ম পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পারবে না।
আগে আমি উম্মত চালিয়ে এসেছি। আপনি আল্লাহর কাছে গিয়ে কমিয়ে নিয়ে আসেন। নবীজি আবারো আল্লাহর কাছর যান। নবীজি আল্লাহর কাছর নামাজ কমিয়ে দেওয়ার দরখাস্ত কতরন। আল্লাহ তায়ালা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কমিয়ে দিলেন। আবারো হযরত মূসা (আ.) এর সঙ্গে দেখা হলো। হযরত মূসা (আ.) বললেন আপনার উম্মতের জন্য এটা অনেক বেশি । তারা এটাও পারবে না। আপনি আরো কমিয়ে নিয়ে আসেন। নবীজি আবারি যায় শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা নবীজির উম্মতের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফেজ করলেন।
আল্লাহ তায়ালা বললেন, এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজেে প্রত্যেকটা ওয়াক্তে দশ ওয়াক্তের সমান সওয়াবের ব্যবস্থা করে দিলেন। অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজের সওয়াব পাওয়া যাবে। ফেরারা পথে আবারো হযরত মূসা (আ.) এর সঙ্গে দেখা। তিনি আবারো বললেন আপনার উম্মাত পারবে না। আপনি আবারো যান কমিয়ে নিয়ে আসেন। বনি ইসরাঈলের বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা আছে। এমতঅবস্থায় নবীজি বললেন, আমার আর কিছু বলতে লজ্জা হচ্ছে। (বুখারি, হাদিস নং: ৩৮৮৭ ; মুসলিম, হাদিস নং: ৩১৩১)
নবীজির জন্য বিশেষ উপহার হাউজে কাউসার
নবীজির জন্য বিশেষ উপহার হাউজে কাউসার আল্লাহ তায়ালা রেখেছেন প্রথম আসমানে। নবীজি সেই হাইজে কাইসারেরও বর্ণনা দিয়েছেন। নবীজি যখন প্রথম আসমানে যান সেখানে দেখেন একব্যক্তির ডান দিকে কিছু রুহ আর বাম দিকে কিছু রুহ। তিনি যখন ডানদিকে তাকান তখন হাসেন আর বাম দিকে তাকালে কাঁদেন। আপনাদের কি মনে আছে প্রথম আসমানে নবীজির সাথে কার দেখা হয়েছিল? হযরত আদম(আ.) এর!
যখন নবীজি দেখলেন ডানদিকে তাকান তখন হাসেন আর বাম দিকে তাকালে কাঁদেন তখন হযরত জিবরাইল (আ.) কে প্রশ্ন করলেন, ইনি কে? জিবরাইল (আ.) বললেন ইনি হযরত আদম (আ.)। আর তাঁর দুই পাশে তাঁর সন্তানদের রূহ। ডানদিকের গুলো জান্নাতি রুহ আর বামদিকের গুলো জাহান্নামী রুহ। এইজন্য তিনি ডান দিকে তাকালে হাসেন আর বাল দিকে তাকালে কাঁদেন।। (বুখারি, হাদিস: ৩৩৪২)।
জান্নাত ও জাহান্নামে নবীজির ভ্রমণ
জান্নাত ও জাহান্নামে নবীজির ভ্রমণ করানো হয়। নবীজির বর্ণনায় জানা যায়, জান্নাতের প্রাসাদগুলো মুক্তার তৈরি আর তার মাটি হলো মৈসকের। (বুখারি, হাদিস নং: ৭৫১৭)। নবীজি এই সফরে দেখলেন এক শ্রেণীর মানুষ যাদের নখগুলো তামার। নিজেদের নখ দিয়ে তারা নিজের গা ও বুক আচড় দিচ্ছে। নবীজি জিজ্ঞাসা করলেন, জিবরাইল! এরা কারা? জিবরাইল (আ.) বললেন, এরা ওই সমস্ত লোক যারা মানুষের গোশত খেত এবং তাদের সম্ভ্রানে আঘাত হানতো।
অর্থাৎ যারা মানুষের গীবত, পরনিন্দা ও লাঞ্ছইত করত। (নুসনাদে আহমদ, হাদিস নং: ১৩৩৪০ ; আবু দাউদ, হাদিস নং: ৪৮৭৮)। এই সফরে নবীজি হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর সঙ্গে মুলাকাত হলো। তিনি নবীজি কে বললেন, আপনি আপনার উম্মাতের কাছে আমাএ সালাম পৌঁছে দিবেন। আর তাদেরকে বলবেন, জান্নাতের মাটি পবিত্র ও সুঘ্রাণযুক্ত, এর পানি সুমিষ্টি এবং এর ভূমি উর্বর ও সমতল। আর এর বৃক্ষ হচ্ছে- سُبْحَانَ اللهِ وَالحَمْدُ لِلهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاّ اللهُ وَاللهُ أَكْبَر.
উচ্চারণঃ সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়ালাহু আকবার।
অর্থঃ আল্লাহ পবিত্র, সব প্রশংসা আল্লাহর, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, আল্লাহ মহান। (তিরমিজি, হাদিস নং: ৩৪৬২)।
নবীজির মেরাজ থেকে ফেরার ঘটনা
নবীজির মেরাজ থেকে ফেরার ঘটনায় তিনি মেরাজ থেকে ফিরে হাতিমে বসেছিলেন। সেখানে মুশরিকরা মেরাজের ঘটনা শুনে কটাক্ষ করতে লাগল। বিভিন্নভাবে নবীজির দিকে বিভিন্ন ব্যাঙ্গাত্যক প্রশ্ন তীরের মতো ছুঁড়তে লাগল। তারা বায়তুল মুকাদ্দাসের সম্পূন্ন বিবরণ চাইলেন। দেখতে কেমন, সেখানের পরিবেশ। নবী সেই সময় বায়তুল মুকাদ্দাসকে সেইভাবে ভালোমতো খেয়াল করেন নি। কিন্তি আল্লাহ তো নবী মুহাম্মদ(সা.) কে কখনো অসহায় অবস্থায় ফেলে দিতে পারেন না তাও আবার মুশরিকদের সামনে।
আরো পড়ুনঃ সিদরাতুল মুনতাহা নামের অর্থ - জেনে নিন আরো ৫০টি নাম
তখন আল্লাহ তায়ালা নবী মুহাম্মদ(সা.) এর চোখের সামনে পুরো বায়তুল মুকাদ্দাসের পূর্ণ দৃশ্য তুলে ধরলেন। নবী মুহাম্মদ(সা.) তখন দেখে দেখে মুশরিকদের বর্ণনা দিলেন। (বুখারি, হাদিস নং: ৩৮৮৬; মুসলিম, হাদিস নং: ১৭২)। মক্কার কোন এক পথে আবু বকর (রা.) হেঁটে যাচ্ছিল। সেখানে তাকে কাফেররা র অবাক করা ঘটনার কথা তুলে ধরে এবং জিজ্ঞাসা করে তুমি কি এই কথা বিশ্বাস করো? আবু বকর উত্তর দিলেন আমি তো এর চেয়েও আরো অনেক জটিল বিষয়েও তাঁকে বিশ্বাস করি। তাঁর কাছে আসা আসমানি বার্তাগুলোর ওপর আমার অটল বিশ্বাস ও সুদৃঢ় ইমান রয়েছে। (তিরমিজি, হাদিস:৩৪৬২)।
শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫
শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫ সালে ও কি বারে অনুষ্ঠিত হবে তা আজকের এই হেডিং এ জানবো। শবে মেরাজ হলো ইসলামি ইতিহাসের ঐতিহ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। এই বিশেষ রাতটি ইসলামিক ক্যালেন্ডারের রজব মাসের ২৭ তম রাতে পালিত হয়। ২০২৫ সালে এই রাতটি জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ সোমবার দিবাগত রাতে অনুষ্ঠিত হবে। আরবি মাস যেহেতু চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে তাই এই তারিখ একদিন আগে পিছে হতে পারে।
যে এই রাতেই আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) মিরাকল ভাবে মিরাজ সম্পন্ন করেন। আমাদের প্রিয় নবী মক্কা থেকে জেরুজালেম এবং তারপে আকাশে উঠে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করেন। এই ঘটনার মাধ্যমে নবী মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহ তায়ালার কাছে থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আদেশ প্রাপ্ত হন। আর এই রাতেই নবী মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহ তায়ালার অনেক নিকটে আসার সুযোগ পান। হযরত জিবরাইল (আ.) এর মাধ্যমে নবী মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহ তায়ালার নিকটে আসেন।
শবে মেরাজের নামাজের নিয়ত
শবে মেরাজের নামাজের নিয়ত করে তারপর নামাজ পড়তে হবে। শবে মেরাজ এর রাত যেহেতু গুরুত্বপূর্ণভ একটি রাত তাই সবাই চেষ্টা করে এই রাতে কিছু ইবাদাত করার। যেহেতু এই রাতে বিশেষ কোন ইবাদত নেই তাই সবাই নফল নামাজ পড়ার মাধ্যমে এই রাতটিকে স্মরণীয় করে রাখতে চাই। তাই যারা শবে মেরাজের রাতে নামজ আদায় করবেন তাদের জন্য নিয়ত করা যেহেতু জরুরি একটি বিষয়। যারা যারা এই রাতকে কেন্দ্র করে ইবাদত করতে চান তাদের জন্য নিচে শবে মেরাজের নিয়ত উল্লেখ করে দেওয়া হলো:
উচ্চারণ: নাওয়াইতুআন উছাল্লিয়া লিল্লাহে তা’আলা রাক’আতায় ছালাতি লাইলাতিল মে’রাজ মুতাওইয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আক্বার।
যদি আপনি এটা মুখস্ত করতে না পারেন তাহলে কোন সমস্যা নয় আপনি৯ চাইলে বাংলায় নিয়ত করতে পারবেন। আমি একটি উদাহরণ দিয়ে দিচ্ছি আপনি চাইলে সেটি বলতে পারেন অথবা আপনি আপনার মতো করে আপনার মন থেকে যেটা আসে সেটাই বলে নিয়ত করে নিতে পারেন।
বাংলায় নিয়ত: আমি কেবলামুখী হয়ে মেরাজের দুই রাকাত নফল নামাজ আল্লাহকে খুশি ও রাজি করানোর জন্য আদায় করছি। আল্লাহুআকবার।
আরো পড়ুনঃ মানসিক চাপ থেকে মুক্তির উপায় - মানসিক চাপ কমানোর ৬টি ঘরোয়া সমাধান
শবে মেরাজের নামাজের নিয়ম
শবে মেরাজের নামাজের নিয়মে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। যেহেতি শবে মেরাজের নামজ নফল একটি ইবাদত। সেহেতু আপনি দুই রাকাত দুই রাকাত করে কমপক্ষে ১২ রাকাত আদায় করতে হবে। অর্থাৎ দুই রাকাত করে ৬ বার নামাজ পড়তে হবে। প্রতি ২ রাকাত নামাজ শুরুর পূর্বে নিয়ত করে নিবেন এরপর আল্লাহুআকবার বলে নামাজ শুরু করে দিবেন। আপনারা চাইলে ১২ রাকাতের উপরে যত খুশি পড়তে পারেন এতে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। শুধু নামাজই নয় নামাজের পাশাপাশি দোয়া, দরুদ, ইস্তেগফার, কুরআন তিলাওয়াত করতে পারেন।
শবে মেরাজের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয়
শবে মেরাজের নামাজ কোন কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয় তা অনেকেরই জানা নেই বিষয়টি এমন নয়। নামাজ আপনি যে কোন সূরা দিয়ে পড়তে পারেন। আপনার যে সকল সূরা মুখস্ত রয়েছে সেই সূরা গুলো দিয়ে আপনি স্বভাবিক যেভাবে নামাজ পড়ে আপনি সেভাবেই পড়বেন। তবে বেশি ফজিলত পূর্ণ কিছু সূরা রয়েছে। যেগুলোতে বিশেষ কিছু বর্ণনা রয়েছে। চলুন সেই সূরা গুলো সম্পর্কে জেনে নিই।
সূরা নাস: সূরা নাসে মানুষের অন্তরে শয়তান কর্তৃক ওসোয়াসা অর্থাৎ খারাপ কিছু ঢোকানো থেকে আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া হয়েছে।
সূরা কাফিরুন: সূরা কাফিরুনে কুফর ও শিরকের বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।
সূরা ফালাক: সূরা ফালাকে আল্লাহর কাছে সকল অনিষ্ট বা খারাপ কিছু থেকে মাফ চাওয়া হয়েছে।
সূরা ইখলাস: সূরা ইখলাসে আল্লাহর একত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সূরা ইয়াসিন: সূরা ইয়াসিনে কিয়ামতের বর্ণনা করা হয়েছে।
সূরা আর-রহমান: সূরা আর-রহমানে আল্লাহত রহমতের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
সূরা আল-মূলক: সূরা আল-মূলকে আল্লাহর রাজত্বের বর্ণনা করা হয়েছে।
সূরা আল-নাহাল: সূরা আল-নাহালে আল্লাহর সৃষ্টির আশ্চর্যমূলক অর্থাৎ বিস্ময়কর দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
এছাড়া নবী মুহাম্মদ(সা.) যে দোয়াটি বেশি বেশি পড়তেন সেটি হলো: "আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান"।
অর্থঃ "হে, আল্লাহ আপনি রজক এবং শাবান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন ও আমাদেরকে রমজান মাস পযর্ন্ত পৌঁছে দিন"।
আরো পড়ুনঃ ছেলেদের জন্য অশ্বগন্ধা পাউডারের উপকারিতা - খেলে কী হয় ও খাওয়ার নিয়ম
শবে মেরাজের রোজা কয়টি
শবে মেরাজের রোজা কয়টি এটা আমাদের সমাজের মায়েরা, চাচিরা জানতে চান। যারা শবে মেরাজকে কেন্দ্র করে রোজা রাখবেন বলে মনস্থির করেছেন তাদের জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এই হেডিংটি। যেহেতু শবে মেরাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন তাই এই দিনকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজের অনেকেই রোজা করে থাকে। তাদের উদ্দেশ্যে বলি এই শবে মেরাজকে কেন্দ্র করে কোন রোযা বা সিয়াম নেই। এখন পর্যন্ত কুরআনে বা কোন হাদিসে কোথাও উল্লেখিত হয় নি।
আরো পড়ুনঃ জন্ম তারিখ অনুযায়ী রাশিফল জানুন ও স্বাভাব যাচাই করুন ২০২৪
যেহেতু কুরআন ও হাদিসে কোথাও শবে মেরাজকে কেন্দ্র করে কোন রোজার কথা উল্লেখ হয় নি সেহেতু রোজা রাখার কোন প্রশ্নই হয় না। তবে আপনারা যেটা করতে পারেন সেটি হলো সকল চন্দ্র মাসের ১৪ বা ১৫ তারিখ রোযা রাখা। এটিএ বিশেষ ফজিলত রয়েছে। সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখা সুন্নত। যদি আপনার শরীরে কুলাতে পারেন তবেই। তাই আপনারা যদি চান তাহলে রজব মাসের ১৪ বা ১৫ তারিখ রোজা রাখতে। শবে মেরাজকে কেন্দ্র করে নয়।
শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত পুরোটাই ইসলামের সাথে অতপ্রত ভাবে জড়িত। শবে মেরাজ আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ(সা.) এর জীবনের সাথে সরাসরি জড়িত। এটি সম্পূর্ণ আমাদের ইমানের সঙ্গে জড়িত। এই রাতে নবী মুহাম্মদ(সা.) প্রথম হযরত জিবরাইল(আ.) এর সঙ্গে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ এর উদ্দেশ্যে আসমানে যান। সেখান থেকে উপহার স্বরুপ ৫ ওবাক্ত নামজ নিয়ে আসেন। যা মুসলিম উম্মাহর জন্য এই রাতের গুরুত্ব ও ফজিলত আরো বাড়িয়ে দেয়।
এই রাতের জন্য বিশেষ কোন ইবাদতের কথা কোন জায়গায় উল্লেখ নেই। শবে মেরাজকে কেন্দ্র কোন আমলের কথাও বিশেষভাবে কোথাও উল্লেখ করা হয় নি। হযরত মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবী ত্যাগ করার পরেও ১০০ বছর সাহাবায়ে ইকরাম জীবিত ছিলেন। তারাও এই ১০০ বছরে শবে মেরাজকে কেন্দ্র করে কোন ধরণের বিশেষ আমক বা কার্যক্রম তারা পালন করেন নি। তাই বলে কি এই রাতের ফজিলত নেই? এমনটাও নয়। এই রাতের ইবাদত বন্দেগি গুলোকে দ্বীনের অংশ মনে করা হয়। সুন্নত হিসেবে এই শবে কদরের রাতের আমল গুলো ভিত্তিহীন।
শবে কদরের রাতের আমল, নামাজ, রোজা, নিয়ত করা যাবে কি?
শবে কদরের রাতের আমল, নামজ, রোজা, নিয়ত এগুলো করা সম্পূন্ন বিদাত ও ইসলামের পরিপন্থি। শিরক বিদাত জাতীয় কার্যক্রমগুলো মিষ্টি জাতীয় হয়ে থাকে। এখানে অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে ইবাদত করা কীভাবে বিদাত হয়ে থাকে? দেখুন আমরা কুরআন ও হাদিসের উপরে নই। এখন পর্যন্ত শবে মেরাজকে কেন্দ্র করে আমল, বিশেষ নামাজ, রোজা সম্পর্ক সহিহ হাদিস পাওয়া যায় নি। মিরাজের রাতের ইবাদতকে কেন্দ্র করে মিলাদ-মাহফিল, জিকির আজগার, দোয়ার অনুষ্ঠান সকল কিছু বিদাত বিদাত বিদাত।
আপনাকে ইবাদত করতে কখনোই নিষেধ করা হয় নি। আপনি শবে মেরাজের রাতে এমনিই কোন নিয়ত ছাড়া আল্লহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য নফল নামাজ পড়েন। তাতে কোন সমস্যা নয়। নবী ও তাঁর সাহবায়ে ইকরামরা যেখানে এই দিনটিকে বিশেষভাবে উদযাপন করেননি সেখানে আমার আপনার মতো লোক কেন করব। তাই আমাদের সকলকে বিদাত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মনে রাখবেন বিদাত মিষ্টি জিনিস। করতে অনেকভালো লাগবেে। কিন্তু এটা করা যাবে না। আমরা নবীর উত্তরসরী হয়ে কখনোই তিনি যেগুলো করেন নি আমরাও সেগুলো করব না ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে বুঝার তৌফিক দান করুনখ আমিন।
আজকের পোস্ট বিষয়ক সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
১। শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫?
উত্তরঃ ২০২৫ সালের শবে মেরাজ জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ সোমবার দিবাগত রাতে। তবে চাঁদ ওপর নির্ভর করছে। এঈ তাইখ একদিন আগে বা পিছে যেতে পারে।
২। নবীজি কীসে করে মেরাজের রাতে আসমানে গিয়েছিলেন?
উত্তরঃ বোরাক নামক একটি বাহলে চড়ে নবীজি আসমানের দিকে রওনা হন। প্রাণিটি দেখতে গাঁধার চেয়ে বড় আর ঘোড়ার চেয়ে ছোট।
৩। মিরাজ সফরে নবীজি কি কি উপহার পেয়েছেন?
উত্তরঃ মেরাজ সফরে নবীজি উপহার পেয়েছেন-
- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ।
- সূরা বাকারার শেষ আয়াতগুলো।
- নবীর উম্মতেরা কীভাবে শিরক থেকে বেঁচে মৃত্যু বরণ করবেন।
৪। নবীজি মেরাজ থেকে ফিরে কোথায় বসে ছিলেন?
উত্তরঃ নবীজি মেরাজ থেকে ফিরে হাতিমে বসে ছিলেন।
৫। শবে মেরাজকে কে কেন্দ্র করে কোন বিশেষ ইবাদত আছে কি?
উত্তরঃ শবে মেরাজকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোন ইবাদত নেই। যারা এটিকে কেন্দ্র করে বিশেষ নামাজ, রোজা , আমল করছেন তারা বিদাত করছেন। আর বিদাতিদের স্থান জাহান্নামে।
আমাদের শেষকথা
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলে আমরা জানলাম, শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫, শবে মেরাজের ইতিহাস, শবে মেরাজকে কে কেন্দ্র করে যে সকল কার্যক্রম গুলো, শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশাকরি আপনি কিছুটা হলেও জানতে ও বুঝতে পেরেছেন। দেখুন শবে মেরাজকে কেন্দ্র করে বিশেষ আমল, নামাজ, রোজার কোন সহিহ হাদিস খুজে পাওয়া যায় নি। তাই এটিকে বিদাত বলে ঘোষনা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে সকল প্রকার বিদাত থেকে দূরে রাখুক। আমিন।
এইরকম আরো তথ্যমূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। কারণ আমরা আমদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরণের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।
আবির ইনফো টেকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url